
দেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃষক মৃত্যু ঘটলেও এখনো পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের কোথাও কৃষক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি বলেই জানা ছিল। এব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ যথেষ্ট গর্বের সাথে এই দাবি জানিয়ে এসেছে এতদিন। সারা দেশে যেখানে কৃষক মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে তোলপাড় কৃষক মহল থেকে রাজনৈতিক মহল সেখানে পশ্চিমবঙ্গ থেকে একজন কৃষকের মৃত্যুর ঘটনা সামনে না আসা সত্যিই অন্যরকম ব্যাপার। কিন্তু এবার আর সেই দাবী করা যাবে না, কারণ এবার পশ্চিমবঙ্গের বুকে হলো কৃষক আত্মহত্যা এবং আত্মহত্যার কথা স্বীকার করেছেন স্বয়ং কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়।
বীরভূমের নলহাটি থানার হরিপুর গ্রামে এদিন এক কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। তাঁর নাম হৃদয় লেট। তিনি রেখে গেছেন তিন মেয়ে ও 1 ছেলেকে। তিন মেয়ের অবশ্য বিয়ে হয়ে গেছে। কিন্তু বাড়িতে রয়েছেন তার বিধবা স্ত্রী এবং অবিবাহিত ছেলে। হৃদয় লেট পেশায় দিনমজুর হলেও তিনি মাঝে মাঝে ভাগ নিয়ে জমি চাষ করতেন। এবারেও তিনি ঋণ নিয়ে দেড় বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু সেই ধান পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে যায়।
এরপর তিনি দ্বিতীয় বার আলু চাষ করার কথা ভেবে 1700 টাকা দরে 2 কুইন্টাল আলু বীজ কিনে চাষ করেছিলেন। কিন্তু সেই আলুতেও ধসা রোগ লাগে, রোগের ফলে আলু নষ্ট হয়। ফলে ঋণে জর্জরিত হৃদয় দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এরপর শুক্রবার বিকেলে তিনি কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেন।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সাথে সাথেই তাকে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত কৃষকের স্ত্রী জানিয়েছেন “ধান আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারপর চড়া দামে আলুর বীজ কিনে চাষ করেছিল। কিন্তু কুয়াশার কারনে সেই আলুতে ধসা লেগে নষ্ট হয়ে যায়। এদিকে বাড়িতে প্রতিদিন মহাজনের লোকজন টাকা চাইতে আসত। এতেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে স্বামী। তারপরেই আত্মহত্যা করে”।
এই মুহূর্তে একমাত্র কর্মক্ষম ব্যক্তির আত্মহত্যায় হৃদয়ের পরিবার যথেষ্ট অসহায় অবস্থায় রয়েছে। হৃদয়ের ছেলে দুর্ঘটনায় পা ভেঙেছে। ফলে সেও ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। যদিও এই কৃষক আত্মহত্যার ঘটনায় কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “এরাজ্যে একজন কৃষকও আত্মহত্যা করেনি। ওই ব্যক্তির আত্মহত্যার পিছনে অন্য কোন কারণ রয়েছে”।
রাজ্যে এবার কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা উঠে আসায় রাজনৈতিক মহলে তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। এতদিন যেখানে এরাজ্যে একটিও কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেনি, সেখানে এবার কৃষি ঋণের ফলে আত্মহত্যার ঘটনা রাজ্য সরকারের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলল। আপাতত ওই কৃষকের পরিবারকে কিভাবে রাজ্য সরকার সাহায্য করে দিনযাপন করতে সেদিকে লক্ষ্য রাখবে রাজনৈতিক মহল