
2021 এর বিধানসভা নির্বাচন হতে হাতে মাত্র আর একবছর। এবার সেদিকেই নজর রাজ্যের যুযুধান রাজনৈতিক শিবিরগুলির। 2021 এর বিধানসভার দখল নিতে এবার বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে চলেছে। আগেই ঠিক হয়েছিল রাজ্য বিজেপির সভাপতি নির্বাচন হতে চলেছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক গুঞ্জন কিছু কম হয়নি। তবে সমস্ত গুঞ্জনকে দূরে সরিয়ে রেখে আবারও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রাজ্য বিজেপির সভাপতির আসন গ্রহণ করলেন দিলীপ ঘোষ। নানা মন্তব্য, বিতর্কে জড়িয়ে পড়লেও দিলীপ ঘোষের ওপরই আস্থা রাখলেন অমিত শাহ। দ্বিতীয়বার সভাপতি হিসেবে তিনি ইনিংস শুরু করছেন, তা ঠিক হলো এদিন ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে।
দ্বিতীয় বার রাজ্য বিজেপির সভাপতির আসন গ্রহণ করলেন পুনরায় মেদিনীপুরের সাংসদ। ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে এদিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দিলীপ ঘোষ বিজেপি সভাপতি নির্বাচিত হলেন। নির্বাচিত হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘প্রথমবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর বিধায়ক, সাংসদ হয়েছি। মানুষ আমায় আশীর্বাদ করেছেন বলেই আজ এই জায়গায়।’ তিনি সভাপতি পদ পাওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে এবং তার দলীয় কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
এদিন মঞ্চে দিলীপ ঘোষকে সবরকম অনুভূতির মিশেলে বক্তব্য রাখতে দেখা যায়। কখনো তিনি আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন, কখনো তিনি আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেছেন, আবার কখনও তিনি স্বভাবসিদ্ধ রসিক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ভদ্রলোকের এক কথা। ২২টা তো ২২টা। অনেকই সাহস করে এই সংখ্যা বলতে পারেনি। কিন্তু আমি বিজেপি সভাপতি। কর্মীদের উপর ভরসা ছিল বলেই বলতে পেরেছিলাম।’ দ্বিতীয়বারের সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেন, বিজেপির ভোট যেখানে ছিল 17% তিনি সভাপতি হওয়ার পরে সেই অনুপাত 40 শতাংশে পৌঁছেছে। যদিও এর জন্য যথেষ্ট খেসারত দিতে হয়েছে বিজেপি দলকে। ভোট বাড়াতে গিয়ে এরাজ্যে 92 জন বিজেপি কর্মীর মৃত্যু হয়েছে, 2 হাজার কর্মী জেলে এবং তিন হাজার কর্মী বাড়ি ছাড়া।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সম্প্রতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ঘিরে বিতর্ক চরমে ওঠে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায়, যে তাঁর দল চরম অস্বস্তিতে পড়ে। কিন্তু দিলীপ ঘোষ এ নিয়ে কোনোরকম অস্বস্তিতে না ভুগে এদিন পরিষ্কার বলে দিলেন কঠোর কথা আরো শুনতে হবে। তিনি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিলেন একুশের বিধানসভা নির্বাচনে এবার রাজ্যের মসনদ দখল করতে বিজেপি শিবির যথাশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চলেছে। সভাপতি হয়ে দিলীপ ঘোষ হুঁশিয়ারি দেন, সারা ভারতবর্ষে যে ভোটযুদ্ধ হতে চলেছে তা শেষ হবে পশ্চিমবঙ্গে এসে। মানুষ এই মুহূর্তে বিকল্প পথ খুঁজছে, শুধু পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে হবে।
প্রথমবার দিলীপ ঘোষ রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর রাজ্যে কিছুটা হলেও পদ্মের হওয়া দেখা যায়। বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে ধর্মীয় হিংসা বাঁধানো, বিতর্কিত মন্তব্যের অভিযোগ আনলেও লোকসভা নির্বাচনের ফল বলছে, বাংলায় অপ্রত্যাশিতভাবে 18 টি আসনে জয়ী হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর দল। শুধু তাই নয়, একের পর এক পুরসভার দখল নেয় বিজেপি। তবে সেই সাফল্য ক্ষণস্থায়ী হয়েছে। বিজেপির পালে হাওয়া এখন অনেকটাই স্তিমিত বলে মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের দখল করা জমি পুনরুদ্ধার করেছে শাসকের দল।
অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিতর্কিত মন্তব্য করে দলকে বারংবার অস্বস্তিতে ফেলেছেন রাজ্য সভাপতি। দলের অন্দর থেকেও শীর্ষ নেতারা তাঁর মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। আপাতত, আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে মেদিনীপুরের সাংসদকে সামনে রেখেই রণকৌশল তৈরি করছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সম্পূর্ণ পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকগণ।