
গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বাংলা থেকে 18 টা আসন পাওয়ার পরে, বাংলার ক্ষমতা ধরে রাখা নিয়ে অনিশ্চয়তার ভাঁজ তৈরি হয়েছিল তৃণমূল নেত্রীর কপালে। যার পরে সেই আতঙ্ক কাটাতে রণনীতিকার হিসেবে প্রখ্যাত ভোটগুরু প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে লোকসভা নির্বাচনের পরবর্তীকালে প্রশান্ত কিশোর তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই, নানা কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের ভাবমূর্তি ফেরানোর উদ্যোগ নেন। কিন্তু নানা সময়ে সেই প্রশান্ত কিশোরকে কটাক্ষ করতে দেখা গেছে ভারতীয় জনতা পার্টির নেতাদের।
আর এবার সেই প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তাকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সূত্রের খবর, বুধবার জলপাইগুড়িতে একটি সভায় উপস্থিত হয়ে প্রশান্ত কিশোর এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একযোগে আক্রমণ করেন মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ। তিনি বলেন, “বাংলার মানুষ বুঝিয়ে দিয়েছেন যে, তারা তৃণমূলকে ভোট দেবেন না। দিদিও বুঝে গিয়েছেন তাই নিজের ভাইদের ভরসা নেই। বিহার থেকে মাসতুতো ভাই পিকেকে নিয়ে এসেছেন। নিজের লোকের ওপর ভরসা নেই। বাইরে থেকে লোক ভাড়া করে এনেছেন।”
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃণমূলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই নেতাদের আচার-আচরণ, ব্যবহার সম্পর্কে সংযত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। আর প্রশান্ত কিশোরের এই নির্দেশে কিছুটা হলেও ব্যতিব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রী বিধায়করা। অনেকেই আড়ালে-আবডালে বলছেন, যদি তারা মুকুল রায়ের যত শক্তিশালী হতেন, তাহলে তারা কারও কথা না শুনে এখনই ভারতীয় জনতা পার্টিতে নাম লেখাতেন। কিন্তু সেদিক থেকে তাদের সেই সাহস হচ্ছে না। তাই সেই সমস্ত নেতা-মন্ত্রীদের ক্ষোভকে আরও বেশি করে বৃদ্ধি করতে বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রশান্ত কিশোরকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মাসতুতো ভাই বলে উল্লেখ করে তৃণমূলের কর্মীদের ক্ষোভকে বাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলেন বলেই মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
অন্যদিকে জঙ্গলমহল নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “দিদিমণি ভয় পেয়েছেন। উত্তরবঙ্গে এসে বলছেন পাহাড় হাসছে, কিন্তু মমতার মুখে এখন আর হাসি দেখা যায় না। জঙ্গলমহলে বলতেন, জঙ্গলমহল হাসছে। এমন ঝামা ঘষার ঘষেছে যে আর এইমুখো হন না। সেদিন বাঁকুড়ায় এসেছিলেন। যে মাওবাদীরা মারপিট করে, ভয় দেখিয়ে মমতাকে জিতিয়েছিল, তাদের খুঁজতে গিয়েছিলেন। তাদের ওষুধ দিয়ে জেল থেকে ছাড়িয়ে ভোটে জেতার চেষ্টা করছেন। কোনো মাওবাদী বাংলায় চলবে না। জয় শ্রীরাম চলবে। ভারত মাতা কি জয় চলবে। মানুষকে ভয় দেখিয়ে ভোটে জেতা যাবে না।”
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ছত্রধর মাহাতো। আর ছত্রধর মাহাতো জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরেই তার তৃণমূলের যোগদানের সম্ভাবনা স্পষ্ট হয়েছে। তাই এই পরিস্থিতিতে বিগত সরকারের আমলে মাওবাদী তকমায় ভূষিত ছত্রধর মাহাতোর জেলযাত্রার ফলে তিনি এবার জেল থেকে বেরোনোয় তাকে মাওবাদী বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। এখন গোটা পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।