পেশ হল নতুন আর্থিক বছরের জন্য বাজেট। দ্বিতীয়বারের জন্য দায়িত্ব পাওয়ার পর মোদী-মন্ত্রিসভার প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট। এমনিতেই, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে নাজেহাল ছিলেন দেশবাসী। আর তার সঙ্গে যোগ হয়েছিল অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ে ভয়ঙ্কর অবস্থা। অর্থনীতির হাল ফেরাতে, উচ্চ মধ্যবিত্তের হাতে ক্রয় ক্ষমতা ফেরাতে না পারলে – অর্থনীতির হাল আরও বেহাল হবে বলে মেনে নিচ্ছিলেন দেশের প্রায় সকল অর্থনৈতিক উপদেষ্টাই।
আর, তাই গত ৫ বছরে আয়করের উপর প্রায় কিছুই না করা মোদী সরকারের উপর সাধারণ মানুষ এবার বড় রকমের আয়করের ছাড় আশা করেছিলেন। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে অনেক কথাই বললেন, আয়করের অনেক স্ল্যাব চালু করলেন। কিন্তু তাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে এই নিয়ে বিভ্রান্তি আরও বাড়ল। তার উপরে, এই প্রথম দেশে আয়কর নিয়ে ‘অপশন’ চালু হল – পুরোনো স্ল্যাব ও নতুন স্ল্যাব।
ফলে, সবাই আপাতত ধন্ধে – আদতে কতটা ছাড় মিলল। আমরা এই নিয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে যা বুঝলাম – তাতে নতুন স্ল্যাবে আপনাকে আগের থেকেও অনেক বেশি ট্যাক্স দিতে হবে! কিভাবে? দেখে নিন নিচের হিসাব –
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন – টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে। সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
ধরে নেওয়া হল – কারোর বার্ষিক মোট আয়ের পরিমান ১৯ লক্ষ টাকা।
এখন দেখে নেওয়া যাক পুরোনো হারে তিনি কি কি ছাড় পেতেন –
স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন – ৫০ হাজার টাকা
এলটিএ – ৫০ হাজার টাকা (আনুমানিক)
প্রফেশনাল ট্যাক্স – ২,৪০০ টাকা
গৃহঋণের সুদ বাবদ – ২ লক্ষ টাকা (সর্বোচ্চ)
৮০ সি – ১.৫ লক্ষ টাকা
৮০ ডি – ২৫ হাজার টাকা
ট্যাক্স ফ্রি আয় – ২.৫ লক্ষ টাকা
অর্থাৎ, মোট ছাড় পাওয়া যেত – ৭ লক্ষ ২৭ হাজার ৪০০ টাকা
অর্থাৎ, মোট কর যুক্ত আয়ের পরিমান – ১১ লক্ষ ৭২ হাজার ৬০০ টাকা
এর মধ্যে,
৫% হিসাবে কর দিতে হত – ২.৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ১২,৫০০ টাকা)
২০% হিসাবে কর দিতে হত – ৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ১ লক্ষ টাকা)
এবং ৩০% হিসাবে কর দিতে হত – ৪ লক্ষ ২২ হাজার ৬০০ টাকার জন্য (মোট ১ লক্ষ ২৬ হাজার ৭৮০ টাকা)
অর্থাৎ মোট করের পরিমান – ২ লক্ষ ৩৯ হাজার ২৮০ টাকা
এর উপর, শিক্ষা সেস ছিল (৪% হারে) – মোট ৯ হাজার ৫৭১ টাকা
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে বাৎসরিক মোট করের পরিমান – ২ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮৫১ টাকা
অর্থাৎ, প্রতিমাসে আপনাকে ট্যাক্স দিতে হত – ২০ হাজার ৭৩৮ টাকা
এবার, দেখে নেওয়া যাক নতুন হারে তিনি কি কি ছাড় পাবেন –
প্রফেশনাল ট্যাক্স – ২,৪০০ টাকা
ট্যাক্স ফ্রি আয় – ৫ লক্ষ টাকা
অর্থাৎ, মোট ছাড় পাবেন – ৫ লক্ষ ২ হাজার ৪০০ টাকা
অর্থাৎ, মোট কর যুক্ত আয়ের পরিমান – ১৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকা
এর মধ্যে,
১০% হিসাবে কর দিতে হত – ২.৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ২৫ হাজার টাকা)
১৫% হিসাবে কর দিতে হত – ২.৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা)
২০% হিসাবে কর দিতে হত – ২.৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ৫০ হাজার টাকা)
২৫% হিসাবে কর দিতে হত – ২.৫ লক্ষ টাকার জন্য (মোট ৬২ হাজার ৫০০ টাকা)
এবং ৩০% হিসাবে কর দিতে হত – ৩ লক্ষ ৯৭ হাজার ৬০০ টাকার জন্য (মোট ১ লক্ষ ১৯ হাজার ২৮০ টাকা)
অর্থাৎ মোট করের পরিমান – ২ লক্ষ ৯৪ হাজার ২৮০ টাকা
এর উপর, শিক্ষা সেস ছিল (৪% হারে) – মোট ১১ হাজার ৭৭১ টাকা
অর্থাৎ, সব মিলিয়ে বাৎসরিক মোট করের পরিমান – ৩ লক্ষ ৬ হাজার ৫১ টাকা
অর্থাৎ, প্রতিমাসে আপনাকে ট্যাক্স দিতে হত – ২৫ হাজার ৫০৪ টাকা
অর্থাৎ, নতুন স্ল্যাবে আপনাকে প্রতি মাসে প্রায় ৫ হাজার টাকার কাছাকাছি বেশি কর দিতে হবে।