
আপনাদের সুবিধার্থে খবরের শেষে বিধানসভা ২০২১ উপলক্ষে আমাদের করা সর্বশেষ সমীক্ষার প্রতিটির লিঙ্ক দেওয়া আছে।
প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – বিধানসভায় ভাল ফল করতে হলে দলীয় নেতাদের যে এক ছাতার তলায় আনতে হবে, সম্ভবত সে কথা বুঝতে পেরেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক উঠেপড়ে লেগেছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার কর্মী সম্মেলন উপলক্ষে বাগদার হেলেঞ্চায় এসেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। আর সেখানে এবার বাগদায় দলীয় কোন্দল মেটাতে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে তাঁকে।
বস্তুত, দীর্ঘদিন ধরেই এখানে নেতাদের পারস্পরিক সম্পর্ক জেলা তৃণমূলের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেই মনে করছিলেন বিশেষজ্ঞরা। দেখতে গেলে রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার আগেই বাগদায় তৃণমূল শক্তিশালী সংগঠন তৈরি করেছিল। সেইসঙ্গে ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটেও রাজ্য বাগদা বিধানসভাকেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী দুলাল বর।
এরপর ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে বাগদা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী হয়েছিলেন তৃণমূলের উপেন বিশ্বাস। কিন্তু ছবিটা পাল্টায় এরপর। সেখানে সম্প্রতি ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটে উপেনবাবুকে পরাজিত হতে দেখা যায়। অন্যদিকে গত বছর লোকসভা ভোটে বাগদা কেন্দ্রে পিছিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী মমতা ঠাকুর।
সেখানে গত পঞ্চায়েত ভোটে ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েত দখল করতে দেখা গেছে বিজেপিকে। আর এখানে বিজেপি তাদের সাংগঠনিক শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে জানা গেছে, এখানকার তৃণমূলের নেতাদের দলীয় কোন্দল। সেখানে এতগুলো গোষ্ঠী-উপগোষ্ঠী আছে, যে তা নিজেরাও হিসেব করে বলতে পারেন না কর্মীরা।
ফলে নেতাদের একাংশের মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে নেতাদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। সেখানে এক নেতার অন্য এক নেতার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা, সমালোচনা করা নিত্যদিনের ব্যাপার। অন্যদিকে ইতিমধ্যেই আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই নেতাদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়েছে।
সেখানে এখনও পর্যন্ত সাতজনের নাম শোনা যাচ্ছে বলেই জানা গেছে। অন্যদিকে, কর্মীদের কথায়, নেতারা নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়ুল মারছেন। সেখানে জেলা তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর বেশি সময় দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে। সেখানে নেতা কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় তৈরির চেষ্টা করছেন বলেও জানা গেছে। কিন্তু এরই মধ্যে এদিন জ্যোতিপ্রিয় নিজের বক্তব্য রাখেন।
তাঁর কথায়, ‘‘আমি বিশ্বাস করি জেলার ৩৩টি বিধানসভা আসনের মধ্যে আমাদের সব থেকে বেশি কর্মী সমর্থক আছেন বাগদায়। পুরনো কর্মীদের গুরুত্ব দিয়ে ফিরিয়ে আনতে হবে।’’ সেইসঙ্গে এলাকার নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘‘আপনারা নিজেদের মধ্যে কচকচানি বন্ধ করুন। সকলকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’’
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
তবে তাঁর এই কথা শুনে তৃণমূলের সাধারণ কর্মী সমর্থকেরা খুশি হয়েছেন বলেই জানা গেছে। এদিন তিনি নেতা কর্মীদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন যে, ‘‘অতীতে একটি সময় জেলায় ২২টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে একমাত্র বাগদা পঞ্চায়েত সমিতিতে আমরা ক্ষমতায় ছিলাম। সেই জায়গা থেকে কেন আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি। কেন বাগদা প্রথম সারিতে আসবে না?’’
সেইসঙ্গে স্থানীয় নেতাদেরকে তাঁকে নির্দেশ দিতে দেখা গেছে। সেখানে তিনি জানান, “পুরনো কর্মীদের কাছে গিয়ে হাত ধরে বলুন ভুল করেছি। কিন্তু আমাদের সঙ্গেই থাকতে হবে।” সেইসঙ্গে এদিন মঞ্চে হেলেঞ্চা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান নিখিল ঘোষকে ডেকে তিনি বলেন, “একটা সময় নিখিল অ্যাকটিভ ছিলেন। এখন কেন ইনঅ্যাকটিভ। আমি নেতৃত্বের কাছে জানতে চাইছি।”
সেইসঙ্গে জানা গেছে, দলীয় নেতাদের মধ্যে সমন্বয় বাড়াতে হেলেঞ্চাতে একটি দলীয় কার্যালয় করা হচ্ছে। জেলা সভাপতির কথা অনুযায়ী, তিনি প্রতি মাসে একবার করে আসবেন বলেও জানা গেছে। সেইসঙ্গে সকলের কাজকর্মের দিকে নজর রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।