
তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই মুকুল রায় ‘ওপেনিং ইনিংসটা’ ফাটাফাটি খেলেছেন বলে মেনে নিচ্ছেন বিজেপি নেতা থেকে শুরু করে কর্মী-সমর্থকরা। প্রথমেই রানী রাসমণি রোডে প্রথম প্রকাশ্য জনসভা, সেখান শাসকদলের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ, তারপর উলুবেড়িয়া, দাঁতন, সবং – সবকটাকেই বড় সাফল্য হিসাবে দেখছে বিজেপি নেতৃত্ত্ব। তার উপরে দল ভাঙ্গানোর যে খেলা তিনি শুরু করেছেন তা সে ডেবরার প্রাক্তন শাসকদলের বিধায়ক হোক বা সিঙ্গুরে শাসকশিবিরে ফাটল ধরানো বা সর্বশেষ পাঁশকুড়া থেকে আনিসুর রহমানকে ঘরে তোলা, মুকুল রায় বিজেপিতে যোগ দিয়ে ‘খেলাটা জমিয়ে’ দিয়েছেন এই মতই পোষন করছেন সবাই।
তবে সর্বভারতীয় বিজেপি আপাতত চূড়ান্ত ব্যস্ত গুজরাট বিধানসভা ভোট সামলাতে। আর তাই ১৮ ডিসেম্বর গুজরাত নির্বাচনের ফল ঘোষণা হলেই আর ২৩ ডিসেম্বর থেকেই বাংলায় বিজেপি-র পঞ্চায়েত ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে বলে বিজেপি সূত্রে জানা যাচ্ছে। রাজ্যের ৪২ টি লোকসভা কেন্দ্রের সবকটিতেই মুকুল রায়ের নেতৃত্ত্বে সভা, সমাবেশ করবে বিজেপি আর তারজন্য ছক সাজাতে ব্যস্ত মুকুল রায় সহ গোটা রাজ্য নেতৃত্ত্ব।
সূত্র মারফত যা জানা যাচ্ছে, মুকুল বাবু তাঁর একমাস ব্যাপী এই যাত্রা শুরু করবেন উত্তরবঙ্গ থেকে। প্রথমত শিলিগুড়িতে বিজেপির সংগঠন ভাল, দ্বিতীয়ত শিলিগুড়ি পুরসভায় এখনও বামেদের হাতে থাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি অন্য বড় শহরের তুলনায় কম। আর তাই শিলিগুড়িতে গিয়ে শাসকদলে বড় ভাঙ্গন ধরাতে পারেন তিনি বলে স্থানীয় সূত্র জানা যাচ্ছে। আর তারপরেই মুকুল রায় পা রাখবেন অনুব্রত গড়ে, বীরভূমেও বিজেপির সংগঠন যথেষ্ট ভাল। আর তাই সেখানে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ করে রাজ্যের শাসকদলকে বার্তা দিতে চায় বিজেপি। যেখানে মুকুল রায়ের সঙ্গী হতে পারেন রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায়। ৪২ টি লোকসভা আসনকেই পাখির চোখ করলেও আপাতত উত্তরবঙ্গ ও বীরভূমে শাসকদলে বড় ভাঙ্গন ধরানোর প্রস্তুতিই শেষ পর্যায়ে বলে জানা যাচ্ছে। এখন দেখার, পঞ্চায়েত ভোটের আগে মুকুল রায়ের এই মাসকালীন সফর বিজেপির পালে বাংলার বুকে কতটা হাওয়া তুলতে পারে।