
প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – পশ্চিমবঙ্গে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের ঢাকের কাঠিটি পরেই গেছে বলা চলে। আর এই নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এর প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে উঠেছে বিজেপি। তবে বিজেপি দলের একটি বিষয় নিয়ে অনেকেই বারবার প্রশ্ন তোলেন যে, বিজেপির আগামী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, তা এখনও এই দলটি স্থির করতে পারেনি। আর এই প্রসঙ্গে সদ্য প্রাক্তন হওয়া মেঘালয়ের রাজ্যপাল নিজেই নিজেকে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে তুলে ধরলেন।
ইতিপূর্বে রাজ্যপাল থাকাকালীনই তিনি ই রাজ্যপালের কাজ শেষে পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে যোগদানের ইচ্ছা ব্যক্ত করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন যে, সে সময়ে রাজ্যপাল থাকার কারণে বর্তমান রাজনীতিতে তিনি তেমন উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা পালন করতে পারেননি। কিন্তু রাজ্যপাল পদ থেকে অব্যাহতি লাভ করলেই তিনি পুনরায় প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে পদার্পন করতে চান।
প্রসঙ্গত বিজেপির রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায় বাংলা রাজনীতিতে একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বলেই পরিচিত। রাজনৈতিক বিষয়ক একাধিক গ্রন্থ যেমন তিনি রচনা করেছেন, এমনি একজন ভালো বক্তা হিসেবে পরিচিত আছেন তিনি। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তিনি তাঁর ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ করতে চলেছেন। কিন্তু, তিনি জানিয়েছেন, বয়সের কাছে নতি স্বীকার করবার লোক তিনি নন, বয়সের বাধাকে উপেক্ষা করেই তিনি রাজনীতির জগতে লড়াই করতে চান।
ফেসবুকে আমাদের নতুন ঠিকানা, লেটেস্ট আপডেট পেতে আজই লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে।
আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে।
অন্যদিকে একজন হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিবিদ হিসেবেও তার যথেষ্ট পরিচয় আছে। প্রসঙ্গত, তিনি জানালেন হিন্দুদের ন্যায় বিচার দেবার উদ্যেশ্যেই তার রাজনীতির পথে যাত্রা। আর হিন্দুদের ন্যায়বিচার দানের উদ্দেশ্যেই তিনি বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হতে চান। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, পশ্চিমবঙ্গে হিন্দুদের প্রতি যথেষ্টভাবে অবিচার করা হয়েছে, অনেক ক্ষেত্রেই হিন্দুরা অন্যায়ের শিকার হয়েছেন।
নিকটবর্তী ইসলামী দেশ পূর্ববঙ্গ থেকে এদেশে বহু হিন্দু ফিরে আস্তে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু এদেশে ফিরে আসা হিন্দু শরণার্থীদের যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে পারেনি পশ্চিমবঙ্গ সরকার। ইতিপূর্বে পাঞ্জাবে নিয়ে ফিরে আসা শরণার্থীদের দিয়ে দ্বিমুখী আন্দোলন হলেও পশ্চিমবঙ্গের আন্দোলন ছিল সম্পূর্ণ ভাবে একমুখী। অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি, পূর্ববঙ্গ থেকে বহু হিন্দু এদেশে ফিরে এসেছে, কিন্তু জনসমতা মেনে কোন মুসলমানকেই কিন্তু পূর্ববঙ্গতে ফেরানো হয়নি।
প্রসঙ্গে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু তিনি অভিযোগের কাঠগড়ায় তুলেছেন। এই প্রসঙ্গে সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন যে, পার্শবর্তী দেশ পূর্ববঙ্গ থেকে আসা হিন্দুদের পূনর্বাসনের ব্যাপারটিকে সম্পূর্ণরূপে উপেক্ষা করেছেন জহরলাল নেহেরু। এ কারণে তিনি এই রাজনৈতিক অন্যায় সংশোধন করতে এগিয়ে আসতে চান তিনি।
তবে বিজেপিকে অন্যান্য বিরোধী দলগুলি যে হিন্দুত্বের পোস্টারবাহক দল বলে সমালোচনা করে থাকে, এই বিষয়টিকে তিনি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করলেন। তিনি জানালেন বিজেপি ভারতীয় সংবিধান কে মেনে চলে, আর ভারতীয় সংবিধান মেনেই হিন্দুদের হিন্দুদের প্রতি ন্যায় বিচার চান তিনি। এ কারণেই তিনি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হতে চান।
তবে এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেছেন যে, রাজ্য বিজেপি দল যেটা ঠিক মনে করবে সেটাই তিনি মেনে নেবেন। নিজের মত তিনি কখনোই দলের ওপর চাপিয়ে দেবেন না। এ প্রসঙ্গে তার মতামত, ” দল যেটা ভালো বুঝবে সেটাই করবে। তথাগতের কথায়, দল তাঁকে যে ভূমিকা দেবে, তা-ই তিনি পালন করবেন। আমি ইতিমধ্যে সক্রিয় রাজনীতিতে ফিরে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করেছি। তবে আমি কী ভূমিকা নেব সেটা সিদ্ধান্ত নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। আমি শুধু আমার ইচ্ছাটা ব্যক্ত করলাম।”
বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি আরও জানিয়েছেন যে, দল তাঁকে যেই দায়িত্বই দিক না কেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরোধিতাই হতে চলেছে তাঁর প্রধান কর্তব্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমালোচনা থেকে তিনি কখনো পিছপা হবেন না। প্রসঙ্গত তিনি জানিয়েছেন, সক্রিয় রাজনীতিতে প্রত্যাবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ও তাঁর দলের প্রতি বিরুদ্ধতা শুরু করবেন । তিনি আরও জানিয়েছেন যে, তিনি তার নিজের নির্বাচনী এলাকায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা অব্যাহত রেখে চলবেন।