দেখতে দেখতে পেরিয়ে গেল একটা বছর। কিন্তু তাও প্রকৃত দোষীদের সাজার খবর শুনতে পেলেন না নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের নিহত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের স্ত্রী রুপালি বিশ্বাস। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একবার লিখেছিলেন, “দন্ডিতের সাথে দন্ডদাতা, কাঁদে যবে সমান আঘাতে, সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার!” কিন্তু বিচারের বাণী কি এভাবেই নীরবে নিভৃতে কাঁদবে! স্বামীর মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পরেও, প্রকৃত দোষীদের কোনো সাজার খবর না শুনে, এখন চোখ দিয়ে শুধুই জল ফেলছেন সেই রুপালিদেবী। প্রসঙ্গত, গত 2019 সালের 9 ফেব্রুয়ারি নদীয়ার হাঁসখালিতে সরস্বতী পুজোর উদ্বোধনে গিয়ে দুষ্কৃতিদের পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে ছোঁড়া গুলিতে খুন হতে হয় তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে।
যার পরে রাজ্যজুড়ে এই ঘটনায় প্রবল চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ঘটনার তদন্তভার সিআইডি হাতে নিয়ে দুষ্কৃতীদের গ্রেপ্তার করলেও, এখনও পর্যন্ত তাঁদের সাজা না হওয়ায় নানা মহলে তৈরি হচ্ছে প্রশ্ন। দেখতে দেখতে সেই ঘটনার একটা বছর পেরিয়ে গেল। এদিন যেখানে সত্যজিৎ বিশ্বাস এক বছর আগে খুন হয়েছিলেন, সেখানেই তার স্মরণসভার আয়োজন করেছিল নদীয়া জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেস। যেখানে উপস্থিত ছিলেন, তাঁর স্ত্রী রুপালি বিশ্বাস, জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্ত, যুব তৃনমূলের সভাপতি রত্না ঘোষ কর, বিধায়ক বিমলেন্দু সিংহ রায়, নীলিমা নাগ সহ অন্যান্যরা। আর সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রীতিমতো চোখের জল পড়ে রুপালিদেবীর।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
আবেগতাড়িত হয়ে রীতিমতো স্বামীর মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের বিচার না হওয়ায় ক্ষোভের সুর বর্ষিত হয় নিহত তৃণমূল বিধায়কের স্ত্রীর গলায়। তিনি বলেন, “যে বা যারা আমার স্বামীকে খুন করেছে, তাদের এখনও সাজা হয়নি। একটি বছর পেরিয়ে গেল, অথচ কেন তাদের এখনও সাজা হল না! কেন এত দীর্ঘ সময় লাগছে! আমি চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাজা ঘোষণা করা হোক। আমি চাই, খুনির ফাঁসি হোক।” অন্যদিকে স্বামীর মৃত্যুর পর কিভাবে তাকে দিনযাপন করতে হয়েছে, এদিন স্বামীর স্মরণসভায় এসে সেই কথাও তুলে ধরেন রুপালিদেবী।
তিনি বলেন, “ছোট্ট ছেলেকে নিয়ে একটি বছর যে কি কষ্টের মধ্যে আমাকে কাটাতে হয়েছে, তা বলে বোঝানোর ভাষা নেই। আমি আইনি সহযোগিতা পেয়েছি। কিন্তু একটি বছর হয়ে গেল যে আমার স্বামীকে খুনের কথা স্বীকার করেছে, তার এখনও পর্যন্ত সাজা না হওয়াটা খুবই আফসোসের। আমি চাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনির ফাঁসি হোক। খুনিকে ফাঁসিতে ঝুলতে মানুষ দেখুক। তাতে এমন অপরাধের প্রবণতা কমবে। আর আমার স্বামীকে খুন করার পরিকল্পনায় যারা যুক্ত, তাদের কঠোর শাস্তি হোক।”
অনেকে বলছেন, রুপালি দেবী এদিন নিজের স্বামীর স্বরণসভাতে এসে পরোক্ষে রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন। তৃণমূল বিধায়ক তথা তার স্বামীর মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গেলেও, এখনও পর্যন্ত প্রকৃত দোষীদের শাস্তি না পাওয়া নিয়ে যে তিনি সত্যিই বিস্মিত, তা নিজের আবেগতাড়িত বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে তুলে ধরলেন রুপালি দেবী। এখন গোটা পরিস্থিতিতে রুপালিদেবীর চোখের জলকে শুকোতে রাজ্য প্রশাসন এই ঘটনার কোনো বিহিত করে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।