ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে এক করে বিজেপি এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে পৌরসভা নির্বাচনে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে বাম এবং কংগ্রেস। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পৌরসভায় এই ব্যাপারে নিজেদের প্রস্তুত করতে রণকৌশল স্থির করছেন তারা। তবে পৌরসভা নির্বাচনের আগে কোচবিহার পৌরসভায় যেভাবে বামেদের কাউন্সিলররা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন, তাতে বামেরা কিভাবে পৌরসভায় সাফল্য পাবে, তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন দেখা দিতে শুরু করেছে।
কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে তারা তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ার মানসিকতা দেখালেও, যেভাবে তাদের দলের কাউন্সিলররা দলত্যাগ করলেন, তাতে তারা কি করে অন্য কারও সমর্থন পাবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে কোচবিহারের হরিপাল চৌপতি সংলগ্ন একটি হোটেলে কোচবিহার পৌরসভার 13 নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রমাপতি গুপ্ত চৌধুরী, 14 নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর তপন কুমার ঘোষ এবং দু’জন নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন।
যার পরেই রীতিমত লোকসভায় কিছুটা মুসড়ে পড়া তৃণমূল কংগ্রেস উজ্জীবিত হতে শুরু করে। এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার পৌরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান ভূষন সিং বলেন, “দুজন বাম কাউন্সিলের আমাদের দলে এসেছেন। যে নির্দল কাউন্সিলর ও প্রাক্তন নির্দল কাউন্সিলররা দলে এসেছেন, তারা একসময় কংগ্রেসের ছিলেন। অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কারা আসবেন, সেই বিষয়ে এখন কিছু বলছি না। সবটাই ধীরে ধীরে প্রকাশ্যে আসবে।”
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
একইভাবে এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিরোধী দলের অনেক নেতাই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আমরা সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।” আর পৌরসভা নির্বাচনের আগে এভাবে কোচবিহার পৌরসভার তাদের কাউন্সিলররা তৃণমূলে চলে যাওয়ায়, তারা কি চাপে পড়ল না! এমনিতেই তো বামেদের এখন করুণ দশা, তার মধ্যে দুজন কাউন্সিলার যদি তৃণমূলে নাম লেখায়, তাহলে তো তারা আরও ব্যাকফুটে চলে গেল!
এদিন প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কোচবিহার পৌরসভার বিরোধী দলনেতা মহানন্দ সাহা বলেন, “যে দুজন কাউন্সিলর চলে গিয়েছেন, তাদের একজন বহিস্কৃত, অন্যজন সাসপেন্ডেড। এখন টিকিট পাওয়ার আশায় অনেকেই দলবদল করবেন। তৃণমূল পৌরসভা চালাতে ব্যর্থ হয়েছে। উন্নয়নের কাজ করতে পারেনি। মানুষ এদের মানবে না।”
অন্যদিকে এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শ্যামল চৌধুরী বলেন, “যে নির্দল কাউন্সিলররা তৃণমূলে গিয়েছেন, তারা তো আগেই কংগ্রেস থেকে বেরিয়ে যান। পরে তৃণমূলের টিকিট না পেয়ে নির্দল থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা তাই ওদের দলবদলে উদ্বিগ্ন নই।” তবে বাম এবং কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখে উদ্বিগ্ন না হওয়ার কথা প্রকাশ করলেও, ভেতরে ভেতরে যে তারা এই ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত প্রায় প্রত্যেকেই। এখন এই উদ্বিগ্নতা কাটিয়ে বাম-কংগ্রেস জোট কোচবিহার পৌরসভা দখলে কোনরূপ পথ এগোতে পারে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।