ক্ষমতা পাবার আশায় অনেক সময়ই শাসকদলের ভিড় করতে দেখা যায় বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এই প্রবণতা অত্যন্ত লক্ষ্য করা যায়। আর এতদিন বিরোধী দল থেকে আসা জনপ্রতিনিধিরা তৃণমূলে যোগদান করলেই, তাদের তৃণমূলের টিকিট ধরিয়ে দেওয়া হত। যার ফলে সেই সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের জনভিত্তি যাচাই না করেই তৃণমূল তাদের নির্বাচনী লড়াইয়ের সুযোগ করে দিতে বলে দাবি একাংশের।
কিন্তু এবার সেক্ষেত্রে কিছুটা বদল আনতে চলেছে রাজ্যের শাসক দল। পৌরসভা নির্বাচনে বিরোধী দল থেকে অনেক কাউন্সিলর এলেও তাদেরকে টিকিট দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এক্ষেত্রে সেই সমস্ত বিরোধী দল থেকে আগত কাউন্সিলরদের জনভিত্তি যাচাই করেই সিদ্ধান্ত নিতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। জানা গেছে, গত সপ্তাহে আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক এই ব্যাপারে একটি ইঙ্গিত দিয়েছেন।
যেখানে ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ার পৌরসভার বিরোধী বাম এবং কংগ্রেস থেকে একাধিক কাউন্সিলর তৃণমূল কংগ্রেসে আসলেও, তাদের টিকিট দেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে। সেখানে মলয় ঘটক জানিয়ে দিয়েছিলেন, বিরোধী দলের একাংশ কাউন্সিলর দলবদল করে আমাদের দলে এসেছেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ভোটাররাও কি এসেছেন! আর জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষকের এই কথা থেকেই স্পষ্ট যে, এই সমস্ত কাউন্সিলরের পেছনে যদি মানুষ থাকে, তাহলেই তাদের টিকিট দেওয়া হবে। আর যদি তা না থাকে, তাহলে দলবদল করে আসা কাউন্সিলরদের কোনোভাবেই টিকিট দেবে না তৃণমূল।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
জানা গেছে, আলিপুরদুয়ার পৌরসভায় 16 জন তৃণমূল কাউন্সিলরদের মধ্যে 2013 সালে সরাসরি তৃণমূলের টিকেটে জিতেছিলেন মাত্র 6 জন কাউন্সিলর। যেখানে পৌরসভা ভোটের একবছর পরে কংগ্রেসের টিকিটে জেতা 6 জন এবং বামফ্রন্টের টিকিটে জেতা চারজন কাউন্সিলর তৃণমূলে যোগ দেন। আর বিরোধী দল থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কাউন্সিলরদের জনভিত্তিতেই তাদেরকে টিকিট দেওয়া হবে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা পর্যবেক্ষক জানিয়ে দেওয়ায় এখন নানা মহলে তৈরি হয়েছে গুঞ্জন।
এদিন এই ব্যাপারে জেলা তৃণমূলের সভাপতি মৃদুল গোস্বামী বলেন, “আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে কাকে টিকিট দেয়া হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। এটা দল ঠিক করবে। তবে টিকিট দেওয়ার আগে বিরোধী দল থেকে আসা কাউন্সিলরদের জনসংযোগ ও তারা সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড ভোটার ধরে রাখতে পেরেছেন কিনা, তা অবশ্যই যাচাই করা হবে।” কিন্তু তৃণমূল এহেন কড়া সিদ্ধান্ত নিলেও তৃণমূলের এই সিদ্ধান্ত তাদের সুফল এনে দেবে বলে দাবি করছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
এদিন এই প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার নগর মণ্ডল কমিটির বিজেপি সভাপতি অমিতাভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “লোকসভা ভোটের ফল প্রমাণ করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস কাউন্সিলরদের সঙ্গে তাদের ওয়ার্ডের ভোটাররা কেউ নেই। লোকসভা ভোটে বিজেপিকে ভোট দিয়ে কংগ্রেস এবং বামেরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছে।”
একইভাবে এবারের পৌরসভা নির্বাচনে তারাই জয়যুক্ত হবে বলে দাবি করছেন এই আলিপুরদুয়ার পৌরসভার এক বাম কাউন্সিলর। তবে যে যাই বলুক না কেন, তৃণমূল অন্য দল থেকে আসা কাউন্সিলরদের জনভিত্তি দিয়ে টিকিট দেওয়ার কথা বললেও, এতে তৃণমূলের লাভ হয়, নাকি বেশি ফায়দা তোলে ভারতীয় জনতা পার্টি! তার দিকেই নজর থাকবে সকলের।