ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম পাখির চোখ জঙ্গলমহলের উন্নয়ন। আর সেই উন্নয়নের লক্ষ্যেই বারবার নিজে ছুটে গেছেন পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম অনগ্রসর এই প্রান্তে। কিন্তু সেই জঙ্গলমহলেই এবার বড়সড় অস্বস্তিতে পড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, কুড়মিদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করা এবং কুড়মালি ভাষা ও সারনা ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে এ বার জঙ্গলমহল জুড়ে প্রশাসনের দরজায় নাছোড় ধর্নায় বসতে চলেছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যাচ্ছে, এমনিতেই জঙ্গলমহলে আদিবাসী সাঁওতাল সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাবি এবং আন্দোলনের হুঁশিয়ারিতে চাপে রয়েছে প্রশাসন, এইবার কুড়মিরাও আন্দোলনের ডাক দেওয়ায় অস্বস্তি বেশ বেড়েছে শাসকদলের।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে জানিয়েছেন যে, কুড়মিদের আদিবাসী তালিকাভুক্ত করার জন্য সুপারিশ করে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার, কুড়মালি ভাষাকে আদিবাসী ভাষা হিসেবে গণ্য করার জন্যও কেন্দ্রকে সুপারিশ করা হয়েছে। এমনকি কুড়মালি ভাষা ও সংস্কৃতির প্রসারের জন্য রাজ্য সরকার কুড়মি উন্নয়ন ও সংস্কৃতি পর্ষদ গড়ে তোলা হচ্ছে। কিন্তু আদিবাসী কুড়মি সমাজের রাজ্য সম্পাদক রাজেশ মাহাতো সেই দাবি উড়িয়ে বলেছেন, এসব পঞ্চায়েত ভোটের আগে কথার কথা। বাস্তবে কুড়মিদের দাবি নিয়ে রাজ্যের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে না, সেই কারণে নাছোড় আন্দোলনে যাওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই আন্দোলন সফল করতে গ্রামেগঞ্জে যুবকদের নিয়ে তৈরি করা হচ্ছে কুড়মি সেনা। আর সতাহনীয় নেতাদের দাবি এক ‘বিশেষ’ রাজনৈতিক দল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কুড়মি সমাজকে বর্তমান রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বহুল বোঝাচ্ছে। এমনকি অনগ্রসর শ্রেণিকল্যাণমন্ত্রী চূড়ামণি মাহাতো নিজে জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী কুড়মিদের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল, কিছু লোক জন কুড়মিদের নাম করে অযথা গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছেন।
জঙ্গলমহলে আদিবাসী ‘বিদ্রোহের’ মুখে রাজ্য সরকার
আপনার মতামত জানান -