
কিছুদিন আগেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছেন একদা দলের অঘোষিত দুনম্বর মুকুল রায়। তারপর বিভিন্ন জায়গায় তাঁর দল ছাড়ার কারণ বলতে গিয়ে মূলত দুটি বিষয়কে তিনি সামনে এনেছিলেন বারবার। এক, দলের মধ্যে ডিম বন্ধকর পরিস্থিতি, যেখানে তিনি হাঁফিয়ে উঠছিলেন। আর দুই, দলের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ, এতটাই তা তীব্র যে দলের নেতা-মন্ত্রীদের ফোন পর্যন্ত ট্যাপ করা হয়, যা নিয়ে তিনি আদালতে পর্যন্ত গেছেন।
গতকাল দলের দাপুটে নেতা, খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বেশ কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করেন, যা বকলমে মুকুল রায়ের দাবি গুলিকেই মান্যতা দিল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। জ্যোতিপ্রিয় বাবু মন্তব্য করেন, বাবা-ছেলের (মুকুল রায় ও শুভ্রাংশু রায়) মধ্যে রাজনৈতিক স্তরে কথা চালাচালি হয়, বিষয়টি নিয়ে দলের কর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে। তাই নজর রাখা হচ্ছে তৃণমূল বিধায়ক শুভ্রাংশু রায়ের ওপর, পার্থ ভৌমিক এবং অর্জুন সিংকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, বাবা মুকুল রায় দলের উপর একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেও ছেলে শুভ্রাংশু রায় দ্বর্থ্যহীন ভাষায় বারবার জানিয়ে এসেছেন দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তাঁর নেত্রী এবং কোনো অবস্থাতেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে কোথাও যাবেন না। দল যদি তাঁকে সমস্ত দায়িত্ত্ব থেকে অব্যাহতিও দেয়, তাহলে তিনি একজন সাধারণ সমর্থক হিসাবেই দলের পাশে থাকবেন বলে জানিয়েছেন শুভ্রাংশু রায়। তা সত্ত্বেও তাঁর উপরে নজরদারির কথা খোলাখুলি বলায় রাজনৈতিক মহলের ধারণা, এই কাজটি হয়তো আরো অনেক নেতা-কর্মীর উপরই করা হয়, অর্থাৎ প্রকারান্তরে শাসকদলের অভ্যন্তরে অবিশ্বাসের বাতাবরণ স্পষ্ট। এখন তাঁর নিজের করা দাবি রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী এইভাবে মান্যতা দেওয়ায় তা নিয়ে আগামীদিনে আরো সুর চড়াবেন মুকুল রায় এবং তা কাজে লাগিয়ে শাসকদলে ভাঙ্গন ধরানোর চেষ্টা করবেন বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।