বরাবর বিজেপির নেতারা বিজ্ঞানকে পিছনে ফেলে বিভিন্ন রকম অলৌকিক মতামত দিয়েছেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে শুরু করে বিপ্লব দেব, পীযূষ গোয়েল, দিলীপ ঘোষ বিজ্ঞানকে রীতিমতো অবজ্ঞা করে বিভিন্ন রকম বালখিল্য মন্তব্য করেছেন। কিন্তু এবার একইভাবে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর সম্প্রতি অর্জুনের তীরে পারমাণবিক শক্তির তত্ত্ব খাড়া করেছেন। উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ গরুর দুধে সোনা রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন। একের পর এক এধরনের মন্তব্যের ফলে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো সমালোচনা চলছে এইসব বক্তাদের নিয়ে।
সম্প্রতি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর বলেছেন, অর্জুন যে তীর নিয়ে যুদ্ধ করত সেই তীরে পারমাণবিক শক্তি ছিল। আর এই মন্তব্যকে ঘিরেই রাজ্য রাজনৈতিক মহলে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে তাঁকে নিয়ে। তাঁর মন্তব্যের বিপরীতে এবার লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা অধীর চৌধুরী রীতিমতো কটাক্ষ করলেন রাজ্যপালকে। রাজ্যপালকে উল্লেখ করে বললেন, অর্জুনের তীর এবার প্রধানমন্ত্রীর মোদির হাতে রাজ্যপাল দিয়ে দিন, মোদি দিল্লিতে বসেই সবাইকে উড়িয়ে দেবেন।
এদিন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী আরো বলেন, রাজ্যপাল হয়ে কিভাবে জগদীপ ধনকর এধরনের অলীক মন্তব্য করেন অধীর চৌধুরী এ দিন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরকে মুখ্যমন্ত্রীর ভাষায় ‘উনি তো বিজেপির লোক’ বলে অভিহিত করেন। সেই সঙ্গে তিনি রাজ্যপালকে পরামর্শ দিয়ে বলেন। অর্জুনের যে তীর নিয়ে রাজ্যপাল মন্তব্য রেখেছেন, সেই তীরকে এবার যেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তাহলে কোন রকম ঝামেলা ছাড়াই প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে বসে সমস্ত সমস্যা সামলে ফেলা যাবে।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
প্রসঙ্গত, সোমবার রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর ইঞ্জিনিয়ারিং ফেয়ারের একটি অনুষ্ঠানে যান এবং সেখানেই তিনি মন্তব্য করে বসেন অর্জুনের তীরে পরমাণু অস্ত্রের শক্তি ছিল। শুধু তাই নয়, রামায়ণের যুগে উড়ন্ত যান ছিল বলেও বিস্তর হৈচৈ বাঁধিয়েছেন তিনি। এর আগে এ ধরনের মন্তব্য করেছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব। তিনি বলেছিলেন, মহাভারতের যুগে নাকি ইন্টারনেট ব্যবহার করা হতো। একের পর এক অলীক বক্তব্যের ফলে এবার রাজ্য রাজনীতির বিতর্কে পালে নতুন করে হাওয়া লেগেছে।
রাজ্যপালের এখানে মন্তব্যের পরে এ রাজ্যের ইতিহাসবিদ থেকে সমাজতত্ত্ববিদ, বিজ্ঞানী থেকে রাজনৈতিক মহল প্রত্যেকেই রাজ্যপালের সমালোচনায় সরব হয়েছেন। অন্যদিকে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর যেভাবে ভারতের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের যুক্তি দিয়েছেন তা মোটেই কাম্য নয়। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পড়ুয়াদের সামনে রাজ্যপালের এ ধরনের অবৈজ্ঞানিক মন্তব্য আদৌ অভিপ্রেত নয়। অন্যদিকে, বিজেপির থেকেও রাজ্যপালকে সমর্থন করে বিভিন্ন মতামত উঠে এসেছে। আপাতত পরিস্থিতির ওপর নজর রেখেছে ওয়াকিবহাল মহল।