লোকসভা হল গণতন্ত্রের পীঠস্থান। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা এখানে এসে সাধারণ মানুষের কথা তুলে ধরেন। অনেকে লোকসভাকে আইনসভা বলেও অভিযোগ করেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে বর্তমান সাংসদদের যে আচরন লোকসভায় দেখা গেল, তা নিঃসন্দেহে সমালোচনার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে সব মহলেই। এদিনের লোকসভায় যে চিত্র পরিলক্ষিত হয়েছে, তা দেখে অনেকেই মনে করতে পারেন, এটা সত্যি অধিবেশন, নাকি বাচ্চাদের ক্লাসরুম! কেননা শাসক-বিরোধী তরজা এবং সাংসদেরা একে অপরকে যে শব্দে বিদ্ধ করলেন, তাতে এরকম প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক।
বস্তুত, সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ অনন্ত হেগড়ে মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে এক বিতর্কিত মন্তব্য করেন। যেখানে মহাত্মা গান্ধীর স্বাধীনতা সংগ্রামকে নাটক বলে অভিহিত করেন তিনি। আর এদিন বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যেই প্রবল বিরোধিতা করতে দেখা যায় লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরীকে। যেখানে বিজেপি সাংসদকে রাবণের সন্তান বলে কটাক্ষ করে অধীর চৌধুরী বলেন, “যে বা যারা গান্ধীজীর মত জাতির জনককে এরকম অপমানজনক ভাষায় নিশানা করেন, তারা রাবণের সন্তান ছাড়া কেউ হতে পারে না।” এদিকে নিজের দলের সাংসদকে এভাবে অপমানিত হতে দেখে পাল্টা ময়দানে নামতে দেখা যায় বিজেপি সাংসদ প্রহ্লাদ যোশিকে।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
যেখানে নিজেদের গান্ধীজীর আসল ভক্ত বলে, কংগ্রেসকে গান্ধীজীর নকল ভক্ত বলে দাবি করেন এই বিজেপি সাংসদ। আর প্রথম পর্যায়ে কংগ্রেস এবং বিজেপি সাংসদের এই তরজা দেখে রীতিমতো সংসদের অনেক অভিজ্ঞ সাংসদদেরই চোখ কপালে উঠে যায়। এদিকে এই ঘটনার পরেই এদিনের অধিবেশনে রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের নিয়ে প্রশ্ন তুলে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “এদেরকে তৃণমূল গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছে না। কেননা তারা রাজ্যের শাসকদলের ভোটব্যাঙ্ক। রাজ্যে যাদের জনসমর্থন নেই, তাদের সভা করতে দেওয়া হলেও, আমাদের তা করতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘোরে কো না মিলে ঘাস, গাধা খা রাহা হে চবনপ্রাস।”
অন্যদিকে এদিনের অধিবেশনে বিজেপির অস্বস্তি বাড়িয়ে সাভারকারকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি করেন শিবসেনা সাংসদ বিনায়ক রাউত। তিনি বলেন, “আমাদের হিন্দুত্ববাদ শেখাতে পারবেন না। সাভারকারকে ভারতরত্ন দিয়ে দেখান, আপনারা কত বড় হিন্দুত্ববাদী!” বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে সংসদের মূল আলোচনা অপেক্ষা এক সাংসদরা সংসদকে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে কটাক্ষ করলেন, তাতে সাধারণ মানুষের মত অপেক্ষা নিজেদের তরজাই সংসদের মাটিতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করলেন বর্তমান সাংসদরা। যা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।