দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনের ছবি ইতিমধ্যে পরিষ্কার হয়ে গেছে দেশবাসীর কাছে। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টি রীতিমতো ধুয়েমুছে সাফ করে দিয়েছে দিল্লির অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে। 2020 র বিধানসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আম আদমি পার্টি তৃতীয় বার দিল্লি বিধানসভার মসনদে বসে কার্যত হ্যাটট্রিক করল। আম আদমি পার্টির দিল্লি দখল করার পর রাজনৈতিক মহলে জোর চাপানউতোর শুরু হয়েছে। তবে এবারের দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনে খুব সামান্য সংখ্যক আসনে বিজেপি জিতলেও পিছিয়ে গেছে অন্যান্য সব কটি দল।
একেবারে শূন্য অবস্থায় শেষ করেছে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন কংগ্রেস, বহুজন সমাজবাদী পার্টি সহ একাধিক দল। খুবই সামান্য সংখ্যক আসনে জিতে বিজেপি কোনরকমে মুখ রক্ষা করেছে। বেশিরভাগ আসন দখল করে নিয়েছে আম আদমি পার্টি। তাই এবার মনে করা হচ্ছে, শূন্য অবস্থায় শেষ করা দলগুলির নির্বাচনী জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এই জামানত বাজেয়াপ্ত হওয়ার পথে কংগ্রেস, বহুজন সমাজ পার্টি সহ অন্যান্য দলগুলোর মধ্যে রয়েছে মায়াবতীর বিএসপি দলও।
অন্যদিকে সূত্রের খবর, দিল্লির রাজনৈতিক হাওয়া পরিবর্তন করতে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করেছে বিজেপির সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। তার সাথে শাহীনবাগের আন্দোলন এবং কেজরিওয়ালের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। এই অবস্থায় মায়াবতীর বিএসপি দিল্লিতে মাত্র 0.5 শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে বলে জানা গেছে। অর্থাৎ, বর্তমানে দিল্লিতে মায়াবতীর বিএসপির দখলে এসেছে এক শতাংশেরও কম ভোট। এর ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই বিএসপির জামানত অবধারিতভাবেই বাজেয়াপ্ত হতে চলেছে।
তবে দেখা গেছে, 1993 সালে প্রথম মায়াবতীর দল দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের লড়াইতে নামে। সেখানে তাঁরা 55 টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সেবারে মায়াবতীর দল ভোট পেয়েছিল মাত্র 1.88 শতাংশ। পরবর্তীতে 1998 সালে বিএসপি দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে মোট 44 টি আসনে লড়াই করে এবং সেবারে উল্লেখযোগ্যভাবে মায়াবতীর দলের হাতে এসেছিল প্রায় 5.76 শতাংশ ভোট। 1998 সালের পর থেকেই মায়াবতীর দল দিল্লি নিয়ে পরবর্তী ভাবনা শুরু করে।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
অন্যদিকে, 2007 সালে উত্তর প্রদেশ নির্বাচনের সময় থেকেই আবার মায়াবতীর দল-বিএসপি’র ছবি কিছুটা বদলে যায়। কারণ সেবার উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে মায়াবতীর দল জয়লাভ করে মোট 206 টি আসনে। যার ফলস্বরূপ দিল্লিতে দেখা যায়, বিএসপি 14.05 শতাংশ ভোট নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছে। শুধু তাই নয়, দিল্লির দুটি আসনে মায়াবতীর দল জয়লাভ করতে সমর্থ হয়। উল্লেখযোগ্যভাবে, এরপর বিএসপির আত্মবিশ্বাস উপর্যুপরি বেড়ে যায়।
মূলতঃ মায়াবতী দিল্লীর দলিত সম্প্রদায়ের কথা মাথায় রেখেই নির্বাচনী প্রচার চালান। দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বর্ণ ও সম্প্রদায়ের মধ্যে মোট 70 জন প্রার্থী দেয় বিএসপি। অন্যদিকে দিল্লিতে বর্তমানে কুড়ি লক্ষের বেশি দলিতদের জন্য 12 টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। এদিকে, আজকে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল দেখে বিএসপি প্রধান লক্ষণ সিং সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, “কেবল দলিতরা যদি আমাদের পক্ষে ভোট দিতো তবে আমাদের আর কারও প্রয়োজন হত না।”
তবে এদিন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, আম আদমি পার্টি যেভাবে দিল্লির নির্বাচনে রাজনৈতিক ঝড় বইয়ে দিয়েছেন, সেখানে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও বিধানসভা নির্বাচনে তারাও দাঁত ফোটাতে পারেনি। সে জায়গায় মায়াবতীর দলের দিল্লীতে যে ফলাফল হয়েছে তা খুবই স্বাভাবিক। অন্যদিকে, নির্বাচনী ফল প্রকাশের পর অরবিন্দ কেজরিওয়ালের জন্য একের পর এক শুভেচ্ছাবার্তা আসতে থাকে দেশের বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে। যা থেকে রাজনৈতিক মহলের দাবী, অরবিন্দ কেজরীওয়ালের জয় সামগ্রিকভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে এক নতুন যুদ্ধের সূচনা করল।