এখনও পর্যন্ত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তবে সামনেই যে পৌরসভার নির্বাচন, তা স্পষ্ট হয়ে গেছে সব রাজনৈতিক দলের অন্দরমহলেই। ইতিমধ্যেই সেই পৌরসভা দখল করতে নিজ নিজ আঙ্গিকে শাসক-বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো ময়দানে নেমে পড়েছে। গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র ভারতীয় জনতা পার্টি দখল করেছিল। যেখানে পৌরসভা ভিত্তিক ফলাফল দেখা গিয়েছিল যে, কোচবিহার পৌরসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও, সব ওয়ার্ডে লিড পেয়েছে গেরুয়া শিবির। যা তৃণমূলকে অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল।
তবে এবার নিজেদের ভাবমূর্তিকে ভালো করতে তৎপর তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে তৃণমূল এবং বিজেপিকে কুপোকাত করতে, কংগ্রেস এবং সিপিএমের তরফে জোট করা হবে বলে জানা যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার পৌরসভায় কাদের পাল্লা ভারী, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জল্পনা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কুড়ি আসনবিশিষ্ট কোচবিহার পৌরসভায় এতদিন তৃণমূলের বোর্ড ছিল। প্রথমেই এখানকার চেয়ারম্যান হয়েছিলেন তৃণমূলের রেবা কুন্ডু। কিন্তু কাউন্সিলারের পুত্রের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় তাঁকে তাঁর পদ থেকে সরে যেতে হয়। আর এরপরই তৃণমূলের তরফে চেয়ারম্যান পদে বসেন বসেন ভূষন সিং।
বর্তমানে এই পৌরসভায় তৃণমূলের 10, বামেদের 8 এবং নির্দলের দুজন কাউন্সিলর রয়েছে। আর এমত পরিস্থিতিতে শনিবার দুই নির্দল কাউন্সিলর এবং দুইবাম কাউন্সিলার যোগদান করেন তৃণমূল কংগ্রেসে। যা তৃণমূল কংগ্রেসের হাত পৌরসভা নির্বাচনের আগে অনেকটাই শক্ত করল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের খবর, শনিবার কোচবিহারের একটি হোটেলে 13 নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর রমাপতি গুপ্ত চৌধুরী, 14 নম্বর ওয়ার্ডের ফরওয়ার্ড ব্লক কাউন্সিলর তপন কুমার ঘোষ, 15 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শম্পা রায় এবং 14 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম বড়ুয়া তৃণমূলে নাম লেখান।
যেখানে তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন কোচবিহার জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিনয়কৃষ্ণ বর্মন। এদিনের এই দলবদল প্রক্রিয়ায় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, কোচবিহার জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, পৌরপিতা ভূষন সিং, আব্দুল জলিল আহমেদ সহ অন্যান্যরা। আর পৌরসভা নির্বাচনের আগে এভাবে বিরোধীদের কোণঠাসা করে বিরোধীদলের 4 জন কাউন্সিলর যেভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন, তাতে তৃণমূল অনেকটাই উজ্জীবিত হল বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
যদিও বা দলবদলের এই প্রক্রিয়াকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিরোধীরা। যেভাবে তাদের দলের কাউন্সিলের তৃণমূলে নাম লেখালেন, তাতে কি তারা নির্বাচনের আগে আরও বিপাকে পড়ল না! এদিন এই প্রসঙ্গে কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “13 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমাপতি গুপ্ত চৌধুরীকে দল আগেই বহিষ্কার করেছে। তাই তিনি কোন দলে যাবেন, কি করবেন তা নিয়ে আমাদের মাথা ব্যথা নেই।” অন্যদিকে বিরোধী দল থেকে এই সমস্ত কাউন্সিলার তৃণমূলে গেলেও, তাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ জেলা বিজেপির সভানেত্রী মালতি রাভা রায়।
এদিন তিনি বলেন, “এরা আগে থেকেই একসাথে মিলে কাজ করেছে। অন্য দল থেকে টিকিট পাবেন না, তাই টিকিটের লোভেই স্বজনপোষণকে হাতিয়ার করে এই কাউন্সিলররা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পৌরসভা নির্বাচনের আগে বাম এবং নির্দল থেকে চার কাউন্সিলারের তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান বিরোধীরা গুরুত্ব দিতে চাইছে না ঠিকই। কিন্তু লোকসভা নির্বাচনে খারাপ ফলাফল করার পর, পৌরসভা নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের কাউন্সিলরদের নিজেদের দিকে টেনে বিরোধীদের কোণঠাসা করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে ভোটবাক্সে তৃণমূলের এই উত্থান অটুট থাকে কিনা, এখন সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।