
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে পরিচালিত উন্নয়ন প্রকল্পে সংযোজিত হলো নতুন এক পরিষেবা। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চালু হল মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব। বৃহস্পতিবার জেলা সফরকালে ঝাড়গ্রামের সভামঞ্চ থেকে রিমোটে হাবের উদ্বোধন করলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নতুন এই বিভাগের নামকরণ করা হয়েছে ‘মাতৃমা’।
প্রসূতি ও সদ্যোজাত শিশুর একইসাথে চিকিৎসা হবে হাসপাতালের এই বিভাগে। জানা যাচ্ছে, মূল হাসপাতালের নিওনেটাল ও প্রসূতি বিভাগ সরিয়ে এই নতুন বিভাগে আনা হবে। উল্লেখ্য এখানে ৭ টি বিভাগে ২৫০ টি শয্যা রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হাবের উদ্বোধনের সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতাল সুপার ডাঃ তন্ময়কান্তি পাঁজা, মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু সহ জেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে জেলার এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিভাগে প্রতিদিন ৮০ থেকে ৯০ টি শিশু বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়। এছাড়াও দৈনিক ৪০ থেকে ৫০ জন প্রসূতি সন্তান প্রসবের জন্য এবং ২০ থেকে ২৫ জন মা, প্রসব-পরবর্তী অসুস্থতার চিকিৎসায় জন্য এই হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তি হন। প্রয়োজনীয় জায়গার অভাব থাকায় এতদিন রোগীদের নানা সমস্যায় পড়তে হত।
আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে
এবার থেকে প্রিয় বন্ধুর খবর পড়া আরো সহজ, আমাদের সব খবর সারাদিন হাতের মুঠোয় পেতে যোগ দিন আমাদের হোয়াটস্যাপ গ্রূপে – ক্লিক করুন এই লিঙ্কে
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এই অভিনব প্রয়াসের প্রসঙ্গে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডু বিশদে জানিয়ে বললেন, “চাইল্ড অ্যান্ড মাদার হাব গড়ে ওঠায় এই সমস্যা আর থাকবে না। রোগী ভর্তি থেকে চিকিৎসা, সবটাই হবে বড় পরিসরে। পুরো চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলতে ৪০ কোটি টাকা খরচ হবে। প্রথম পর্যায়ে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এতে নতুন চারতলা ভবন গড়ে উঠেছে। চিকিৎসার কিছু সরঞ্জাম আনা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তির নতুন শয্যা দেওয়া হয়েছে”।
এর সঙ্গেই পঞ্চাননবাবু আরো যোগ করেন, “প্রত্যেক শয্যায় অক্সিজেনের ব্যবস্থা থাকছে। থাকছে ইমার্জেন্সি বিভাগ, লেবার রুম, হাই–ডিপেন্ডেন্সি ইউনিট, নিও নেটাল ইউনিট, একল্যাম্পসিয়া ইউনিট, অপারেশন থিয়েটার। অস্ত্রোপচারের পর জটিল অসুখের রোগীদের পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য একটি পৃথক অবজারভেশন ইউনিটও থাকছে”। জানা যাচ্ছে প্রথম পর্যায়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে কার্যকালের দ্বিতীয় বর্ষেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মেদিনীপুর সফরকালে ২০১২ সালে মেডিক্যাল কলেজে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
আর সেইমত ২০১৩ সালে তিনি এই প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। তবে পরিকাঠামোগত কিছু ত্রুটি থাকার কারণে মাঝে এই প্রকল্পের কাজ বেশ কিছুদিন বন্ধ ছিলো। সেইসব অপ্রত্যাশিত জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে এই প্রকল্পের কাজ ঠিক ভাবে সমাপ্ত হওয়ায় হাসপাতালের এই বিভাগের সূচনা হল এদিন। স্বাভাবিকভাবেই মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে জেলার জন্য এইরকম একটি অনন্য উপহার পেয়ে খুশিতে ভাসছেন মেদিনীপুরবাসী।