লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে উত্তপ্ত হতে দেখা গেছে উত্তর 24 পরগনার ভাটপাড়া এলাকাকে। আর তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের পর সাংসদ হয়ে উত্তর 24 পরগনা জেলার একাধিক পৌরসভা বিজেপির দখলে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন অর্জুন সিংহ। কিন্তু যতদিন গিয়েছে, ততই তার প্রভাবের পতন লক্ষ্য করা গেছে।
ইতিমধ্যেই একের পর এক পৌরসভা তৃণমূল তাদের দখলে নিয়েছে। আর শেষ পৌরসভা ছিল ভাটপাড়া। সম্প্রতি সেই পৌরসভারও দখল নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তবে তৃণমূল এই ভাটপাড়া পৌরসভার দখল নিলেও, ফের ভাটপাড়া শাসক-বিরোধী সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল অনেকে। আর অবশেষে সেই আশঙ্কাই এবার সত্যি হল।
সূত্রের খবর, এবার তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী গোপাল রাউতের বাড়িতে বোমাবাজির ঘটনায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল এলাকায়। জানা যায়, রবিবার কাকিনাড়া বাজার এলাকায় নিজের বাড়িতে সপরিবারে ঘুমোচ্ছিলেন এই তৃণমূল কর্মী। কিন্তু ভোরবেলার দিকে হঠাৎ তার বাড়ি লক্ষ্য করে পরপর তিনটি বোমা ছোড়া হয়। যেখানে বোমার শব্দে কেঁপে ওঠেন তার পরিবার পরিজনেরা।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন – টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে। সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
এদিকে তৃণমূল কর্মী গোপাল রাউত এই বোমার শব্দ পেয়ে বাড়ির বাইরে বের হতে না হতেই, দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়। আর ভাটপাড়া পৌরসভা তৃণমূল দখল করার পর, এভাবে বোমাবাজির ঘটনায় এখন চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। কিন্তু কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটল! এই প্রসঙ্গে যে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা ছোড়া হয়েছে, সেই তৃণমূল কর্মী গোপাল রাউত বলেন, “বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমি আগে অর্জুন সিংহের সঙ্গে ছিলাম।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটের সময় তার সঙ্গে থেকেছি। আগে যখন অর্জুন সিং তৃণমূল দল করতেন, তখন আমি তার সঙ্গে থেকেই তৃণমূল করেছি। কিন্তু সাংসদ ভোটে জেতার পর বুঝেছি, উনি নিজের ভালো ছাড়া আর কিছু বোঝেন না। তাই আমি ওনার সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে এসেছি। সেই শত্রুতা থেকেই আমার বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। যারা এই কাজ করেছে, তাদের পুলিশ অবিলম্বে গ্রেপ্তার করুক।”
তবে তৃণমূল কর্মী গোপাল রাউত অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে এহেন অভিযোগ করলেও, তা সম্পূর্ণরূপে অস্বীকার করেছেন ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহ। এদিন তিনি বলেন, “ও আগাগোড়াই দুষ্কৃতীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলত। তাই আমার সঙ্গে যখন ছিল, তখন ওকে বলতাম, এইসব সঙ্গ ছাড়তে। এখানে আগে থেকেই ওর অনেক ব্যক্তিগত শত্রু আছে। তারাই কেউ হয়ত ওর বাড়িতে বোমা মেরে থাকতে পারে।”
তাঁর বক্তব্য, “আমি পুলিশের কাছে অনুরোধ করব, পুলিশ যেন ওর যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে।” রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যেভাবে ভাটপাড়ায় ক্রমাগত বোমাবাজির ঘটনা ঘটে চলেছে, তাতে প্রশাসনের সক্রিয়তার অভাব নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। এখন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজির পর প্রশাসনের হুশ ফেরে কিনা! সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।