সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আন্দোলন চলছে এখনো। অন্যদিকে, এ রাজ্য প্রথম দিন থেকেই তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব ইস্যুতে প্রতিবাদ জানাতে রাজপথে নেমেছেন। কংগ্রেস, তৃণমূল সহ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ক্রমাগত চাপ বাড়িয়ে চলছে গেরুয়া শিবিরের ওপর। তাই পাল্টা চাপ এর কৌশল হিসাবে সিএএ নিয়ে আক্রমণাত্মক পদ্ম বাহিনী। পরিস্থিতি বাগে আনতে এনআরসি নিয়ে মানুষের দরজায় দরজায় গিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বোঝানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে ইতিমধ্যে বিজেপির পক্ষ থেকে। তাঁদের প্রচার শুরু হয়েছে লিফলেট ও বই সহযোগে।
অন্যদিকে, রাজ্যের তৃণমূল দলও পিছিয়ে থাকার পাত্র নয়। ইতিমধ্যে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁর দল একাই নাগরিকত্ব ইস্যুতে আন্দোলন চালিয়ে যাবে। তাই এবার বিজেপির সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বোঝানোর আগেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার সারতে ব্যস্ত তৃণমূল সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে। সূত্রের খবর, এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে তৃণমূল এবার এ রাজ্যের পুরভোটের প্রচার চালাবে বলে ঠিক করেছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে, তৃণমূলের মহিলা সংগঠন বাড়ি বাড়ি গিয়ে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইন এর বিরোধিতা চালিয়ে যাবে।
তৃণমূলের মহিলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে তাঁরা সাধারণ জনগণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সিএএ এবং এনআরসি সম্পর্কে তথ্য প্রমাণ দিয়ে এর ভয়ঙ্কর দিকটি তুলে ধরবে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বুথে বুথে শুরু হয়েছে এই ব্যাপারে কর্মশালা। রীতিমত প্রশিক্ষণ সহযোগে তৃণমূল মহিলা ব্রিগেডকে তৈরী করা হচ্ছে। প্রশিক্ষণ শিবিরে ক্লাস নিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রীরা। আপাতত এনআরসির বিরোধিতার অস্ত্র তৈরি করে রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
উল্লেখ্য, 2019 এর লোকসভা ভোটের পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জনসংযোগের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে, প্রশান্ত কিশোরের পরিকল্পনায় দিদিকে বল কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূলের প্রচার চলছে। ওই একই ধারায় এবার এনআরসি এবং সিএএ বিরোধিতায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা সংগঠন প্রচার চালাবে বলে জানা গেছে। তৃণমূলের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রশিক্ষণ শিবিরে শেখানো হচ্ছে, কিভাবে জনগণের সামনে এনআরসি বিরোধিতা প্রসঙ্গে বলতে হবে।
যে নির্দেশিকা প্রশিক্ষণ কর্মীদের দেওয়া হচ্ছে, তার মধ্যে রয়েছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ জনগণকে বলতে হবে, ‘আমরা সবাই দেশের নাগরিক। আমিও নাগরিক, আপনিও নাগরিক। তাই নাগরিকত্বের নয়া পরিচয় আবার কি দেবে বিজেপি?’ এর সাথে ভোটার লিস্টে নাম মেলাতে হবে এবং এনআরসি হলে যে হিন্দুরাও বিপদে পড়তে পারে তা বোঝাতে হবে। এনআরসির বিরোধিতা করতে গিয়ে আসামের পরিস্থিতি তুলে ধরা হবে জনগণের কাছে। অসমে এনআরসির ফলে কত শতাংশ হিন্দু তালিকা থেকে বাদ পড়েছে সে কথা জানানো হবে সবাইকে।
বিগত কয়েক দিন ধরেই দেশের রাজনীতি নাগরিকত্ব ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়েছে প্রতিবাদ, আন্দোলন। সারাদেশে বিরোধী দলগুলি বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে সংশোধনী নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এনআরসি নিয়ে যেভাবে সারা দেশে তুমুল বিক্ষোভ চলছে তা সামাল দিতে বিজেপি সরকারকে এখনো পর্যন্ত যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। আপাতত দেশের এবং রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নাগরিকত্ব ইস্যুতে কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে, সেদিকেই নজর রাখছে দেশের ওয়াকিবহাল মহল।