
এনআরসি নিয়ে ইতিমধ্যেই দেশজুড়ে শাসক বনাম বিরোধীদের তরজা চরম আকার ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিটি বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলই এই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন বাতিলের দাবিতে বিজেপির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। তবে বরাবরই সেই বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে এই আইন হলে কারও নাগরিকত্ব যাবে না বলে পাল্টা দাবি করেছে কেন্দ্রের শাসক দল।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে হঠাৎ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের জনসভায় এনআরসি বিরোধী স্লোগান তুলতে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে। যার ফলস্বরুপ সেই ব্যক্তিকে চরম মারধরের শিকার হতে হল বিজেপি কর্মীদের দ্বারা। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কিছুদিন পরেই দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। বর্তমানে সেই বিধানসভা ভোটে ভালো ফলাফল করতে প্রবল চেষ্টা করছে ভারতীয় জনতা পার্টি।
এদিন তারই অঙ্গ হিসেবে দিল্লির একটি জনসভায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। যেখানে তিনি বলেন, “ভোটের দিন যখন বোতাম টিপবেন, সমস্ত রাগ ঢেলে দিয়ে টিপবেন। বাবরপুরের কারেন্ট যেন শাহিনবাগে গিয়ে লাগে।” এদিকে অমিত শাহ যখন মঞ্চে বক্তব্য রাখছেন, ঠিক তখনই দর্শকাসন থেকে ভিড়ের মধ্যে এক ব্যক্তি স্লোগান তোলেন, এনআরসি ফেরত নিন।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন – টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে। সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
আর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঞ্চ থেকে বক্তব্য রাখার সময় সেই কথা শুনতে না পেলেও, নিচে থাকা বিজেপি নেতা কর্মীরা সেই ব্যক্তির এনআরসি বিরোধী কথা শুনতে পান। আর এর পরেই শুরু হয় হুলুস্থুল কাণ্ড। অভিযোগ, লোহার চেয়ার উঠিয়ে রীতিমতো সেই ব্যক্তিকে প্রবল মারধর করেন বিজেপি নেতা কর্মীরা। এদিকে এই ঘটনা মঞ্চ থেকে দেখামাত্রই মাইকে গোটা পরিস্থিতি শান্ত করতে উদ্যোগী হন অমিত শাহ।
যেখানে তিনি বলেন, “আরে ভাই থামুন। সিকিউরিটিওয়ালারা দ্রুত পৌঁছে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যান ওই ব্যক্তিকে।” কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই ঘটনা থামাতে হলেও, কাজের কাজ কিছুই হয়নি। উল্টে ক্রমাগত বিজেপি নেতা কর্মীদের মারধরের শিকার হতে হয় সেই এনআরসির বিরুদ্ধে স্লোগান তোলা ব্যক্তিকে। পরে অবশ্য গোটা পরিস্থিতি শান্ত হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের শাসকবর্গ এনআরসির স্বপক্ষে যতই মতামত দিন না কেন, সাধারণ মানুষের অনেকেই যে তা মেনে নিতে পারছেন না, তা এদিনের ঘটনা থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেল। আর তাইতো অমিত শাহ সভা মঞ্চে বক্তব্য রাখার সময় দর্শকাসন থেকে এক ব্যক্তির এনআরসি বিরোধী স্লোগান রীতিমতো অস্বস্তিতে ফেলে দিল ভারতীয় জনতা পার্টিকে।
তবে প্রতিবাদীদের কণ্ঠস্বর যেভাবে দমানোর জন্য উদ্যোগী হলেন বিজেপি নেতা কর্মীরা, তাতে দেশের শাসকবর্গের ভূমিকা নিয়ে নানা মহলে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। উল্টোদিকে গেরুয়া শিবিরের মত হল, বর্তমানে এনআরসি নয়, দেশজুড়ে চালু হয়েছে সিএএ। যার মাধ্যমে দেশের মধ্যে থাকা সন্ত্রাসবাদীদের চিহ্নিত করা যাবে। আর এই ‘শুভকাজে’ বাধা দিলে, দেশের জনগণই তার বিরুদ্ধে গর্জে উঠবে – এদিনের ঘটনা তারই প্রমাণ!