
সম্প্রতি দিল্লীর জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় রাতের অন্ধকারে পড়ুয়াদের ওপর হামলার ঘটনায় সারাদেশের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছিল। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এই ঘটনার তীব্র নিন্দা শুরু করে দুর্ঘটনায় আহত ছাত্র সংসদের নেত্রী ঐশী ঘোষের পাশে দাঁড়ায়। মূলত এনআরসি, সিএএ নিয়ে কিছুদিন যাবৎ তুমুল বিক্ষোভ চলছিল কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে জেএনইউতে। এই বিরোধিতার মুখ্য ভাগে ছিলেন ছাত্র নেত্রী ঐশী ঘোষ। তার পাশে গিয়ে দাঁড়ান জেএনইউ এর প্রাক্তন ছাত্র কানহাইয়া কুমার।
এদিন জেএনইউ এর প্রাক্তনী কানহাইয়া কুমার কলকাতার বিধান নগরের বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত সিপিআই দ্বারা পরিচালিত ‘ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত শতবর্ষ উদযাপন’ উপলক্ষে এক সভায় হাজির হন এবং সেখানেই কানাহাইয়া বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তব্যে পরিস্ফুট হয়ে ওঠে আগামী দিনে বাংলার মুখ হিসেবে তিনি ঐশী ঘোষ এর মতন ছাত্র-ছাত্রীদের দেখতে চান। তিনি বলেন, বাংলার তরুণ প্রজন্মকেই সামনের দিনে রাজনৈতিক ব্যাটন হাতে এগিয়ে আসতে হবে বাংলার নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। সম্প্রতি জেএনইউ এর প্রতিবাদ কলেজ ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে তার বাইরে ও ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিন ইন্দ্রজিৎ গুপ্ত শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে যে সভাটি হয়েছিল সেই সভার প্রধান আলোচনার বিষয় ছিল ‘দেশ বাঁচাও সংবিধান বাঁচাও’। এনআরসি সভায় উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম লিভারের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেস নেতা সৌমেন মিত্র সহ প্রদীপ ভট্টাচার্য প্রমুখরা। প্রত্যেকেই বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধভাবে লড়াইয়ের জন্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে যে বনধ হয়েছিল সারা ভারত জুড়ে, সেই বনধকে সমর্থন জানায় কংগ্রেসরা।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
এদিন সিপি আই এমের দীপঙ্কর ভট্টাচার্য এনপিআরের বিরোধিতা করতে গিয়ে বলেন, এনপিআর এর মাধ্যমে যে কোনো নাগরিককে খুব সহজেই সন্দেহজনক আখ্যা দিয়ে দিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে, মহম্মদ সেলিম এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে উদাহরণ দেন মহাভারতের। তিনি বলেন মহাভারত যেভাবে কংসের অন্যায় ও পাপের ঘড়া ভরে যায় তখন কানহাইয়ার আবির্ভাব হয়। এদিন ব্যারাকপুরে কানহাইয়া কুমার, মহম্মদ সেলিম এবং দীপঙ্কর ভট্টাচার্য কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে একটি সভা করেন। সেই সভা বন্ধ করতে অবশ্য বিজেপি সমর্থকরা পাল্টা স্লোগান দিয়ে পোস্টার মারতে থাকেন। গন্ডগোল বাঁধানোর দায়ে পুলিশ 8 জনকে গ্রেপ্তার করেছে ইতিমধ্যেই।
এনআরসি, সিএএ এবং এনপিআর নিয়ে যেভাবে সারাদেশ জুড়ে তুমুল বিক্ষোভ চলছে, তাতে কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্ব খুব একটা সুবিধাজনক জায়গায় নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব একের পর এক অবস্থান-বিক্ষোভ সামাল দিতেই রীতিমত হিমশিম খাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। আপাতত দেশের এবং প্রতিটি রাজ্যের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নাগরিকত্ব ইস্যুতে কোন দিকে মোড় নিতে চলেছে, সেদিকে লক্ষ্য রাখছে রাজনৈতিক মহল।