“আপনি বিধানসভায় ভাঙচুর করেছিলেন।”সুজন, “প্রমাণ করুন”মমতা কলকাতা রাজ্য February 15, 2020February 15, 2020 দীর্ঘদিনের লড়াই দুই যুযুধান রাজনৈতিক শিবির তৃণমূল কংগ্রেস এবং বামেদের মধ্যে। এদিন আবারও রাজ্যবাসী এই লড়াই প্রত্যক্ষ করল বিধানসভার অলিন্দে। এদিন বিধানসভায় তুমুল বিতর্ক শুরু হয় তৃণমূল বনাম বাম শিবিরের মধ্যে। একদিক থেকে যেমন আক্রমণ করেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী, অন্যদিকে সেই আক্রমণ আটকে দ্বিগুন বেগে বামেদের আক্রমণ করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আক্রমণ প্রতিআক্রমণের মধ্যেই বামেদের নিজেদের চরকায় তেল দেওয়ার পরামর্শ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে শুক্রবার তুমুল হৈ হট্টগোল বাঁধল রাজ্য বিধানসভায়। শুক্রবার বিধানসভায় তুমুল বাদানুবাদে জড়ালেন দুই অতি পরিচিত রাজনৈতিক নেতা এবং নেত্রী। একদিকে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যদিকে বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। এদিন বিধানসভায় সুজন চক্রবর্তী প্রথমে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে বলেন, “বাংলায় বাম ভোট বিজেপিতে যায়নি। বরং ভবানীপুরে পিছিয়ে তৃণমূল।” একইসঙ্গে এদিন ঐশী ঘোষের কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভা করতে না দেওয়ার প্রসঙ্গটি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “ঐশী আরএসএস বিরোধী। এর মধ্যে অন্য কোনও যোগ আছে কি?” উপরন্তু বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বরাবরের মতন তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে গোপন আঁতাতের দাবি করেছেন এদিন। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীও ছেড়ে দেবার পাত্রী নন। তিনিও জবাব দিতে উঠে বলেন, “সব এক বুলি। কুত্সা, অপপ্রচার। অবসাদ থেকে রাজনৈতিক দূষণ।” এদিন ঐশী ঘোষের সভা বাতিল প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, “দীনেশ ত্রিবেদিকে পাঠিয়েছিলাম। সৌজন্য বজায় রেখেছি। বেশি জ্ঞান দেবেন না। নিজের চরকায় তেল দিন। আমিও এক সময় বিরোধী ছিলাম।” এরপরেই সুজন চক্রবর্তী বলে বসেন, “হ্যাঁ, তখন আপনি বিধানসভায় ভাঙচুর করেছিলেন।” আর এর পরেই আগুনে ঘি পড়ে। মুখ্যমন্ত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে সুজন চক্রবর্তীকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেন। তিনি বলেন, “কোথাও কোনও ভিডিওতে নেই। প্রমাণ করুন নইলে কথা ফেরত নিন।” ফেসবুকে আমাদের নতুন ঠিকানা, লেটেস্ট আপডেট পেতে আজই লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে। আপনার মতামত জানান - আর তারপরই তিনি সুজন চক্রবর্তীর কথার জবাব দিতে গিয়ে ভবানীপুর নিয়ে বলেন, “ভবানীপুর নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে না। আপনি যাদবপুর নিয়ে ভাবুন। গতবার লাড্ডু পেয়েছেন। এবার রাজভোগ পাবেন।” অন্যদিকে, সরস্বতী পুজোর দিন বন্ধ থাকার জন্য বামেদের একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী এদিন। এই নিয়ে সুজন চক্রবর্তীকে পাল্টা মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, “সরস্বতী পুজোর দিন কেন বনধ করেছিলেন? সাম্প্রদায়িক তাস খেলার জন্য? বাংলাকে বনধের বিশ্ববিদ্যালয় করছেন? (জলঙ্গিতে) মৃত্যুর জন্য আপনারা দায়ী?” তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বামেদের বিরুদ্ধে যেরকম কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন, ঠিক একইভাবে কংগ্রেসকেও ছাড়েননি তিনি। এদিন বিধানসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কংগ্রেস যত সিপিআইএমের কাছে যাচ্ছে তত সাইনবোর্ড হয়ে যাচ্ছে। ওই জন্য কংগ্রেস ছেড়েছিলাম। দেখছেন না সব জায়গায় আঞ্চলিক দল শক্তিশালী, কংগ্রেস নয়। যেখানে আঞ্চলিক দল নেই, কংগ্রেস শুধু সেখানেই। আমি বিরোধী দলের রাজনীতি করেছি।” অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনছেনা কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেসের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যকে বলা হয়েছে, ‘সবই আবোল-তাবোল কথা’। সাম্প্রতিককালে অবশ্য তৃণমূলের লড়াই বামেদের বদলে বিজেপির সাথে শুরু হয়েছে। তবে বহুদিন পরে বিধানসভার অলিন্দে তৃণমূল নেতৃত্বের তরজা মুখ্যমন্ত্রীকে আবার 2011 সালের আগের রূপে ফিরিয়ে নিয়ে গেল বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তবে এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রতিটি দলের কাছে প্রতিপক্ষ একজনই আর তা বলার অপেক্ষা রাখে না সেটা যে বিজেপি। আপাতত বিজেপিকে আটকানোর জন্য পশ্চিম বাংলার প্রতিটি রাজনৈতিক দল নিজেদের মতন করে লড়াই শুরু করেছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে ওয়াকিবহাল মহল। আপনার মতামত জানান -