
রাজ্যের সিংহভাগই গ্রামাঞ্চল। এবং গ্রামের প্রধান তিনটি স্তরের একটি সমবায় সমিতি। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে সমবায় ব্যাঙ্ক ও সমিতি গুলিকে আর্থিক দিক থেকে পেশাদার ও স্বচ্ছল হওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বাতলে দিলেন নির্দিষ্ট পদ্ধতি। স্বচ্ছতা, আর্থিক শৃঙ্খলা, পেশাদারি এবং নিয়মিত আর্থিক লেনদেনের হিসাব পরীক্ষা , এই চারটি স্তরেই সমবায় সমিতি ও ব্যাঙ্কগুলির উন্নতি সম্ভব বলেই জানান তিনি।
এদিন সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের নেতৃত্বে গ্রামের প্রায় প্রতিটি সমবায় সমিতির সদস্যদের নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে ডাকা হয়। এদিনের মঞ্চ থেকে সমবায় সমিতি ও ব্যাঙ্কগুলিকে চাঙ্গা করার মন্ত্র দেন নেত্রী। তিনি বলেন, এক সময়ে সমবায় ব্যাংক গুলি নিজেদের ইচ্ছামত চলত। কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। এখন পরিবর্তনের প্রয়োজন। নিজ নিজ কাজে পেশাদারিত্ব আনতে হবে টিকে থাকতে গেলে।প্রয়োজনে ঋণ দিতে হবে ঠিকই ।কিন্তু সময়মত সেই ঋণ পরিশোধের ব্যবস্থাও রাখতে হবে। যাকে খুশি ঋণ দেওয়া যাবে না। লোকসানের বোঝা রাজ্য সরকার বইবে না।
পাশাপাশি তিনি এদিন সমবায় সমিতি ,ব্যাঙ্কগুলির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন , কাজে স্বচ্ছতা ও দ্রুততার প্রয়োজন রয়েছে। এই সমিতি গুলির সঙ্গে জড়িত প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষের অভিযোগ সমস্যার সমাধান করতে হবে। সেজন্য এদিন তিনি একটি কমিটি ঘটনা করে দেন। এবং নির্দেশ দেন মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখে আগামী ৬মাসের মধ্যে সুপারিশ জমা দিতে হবে। তারপর রাজ্য সরকারের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি কর্মীদের পেশাদারিত্ব আনতে উন্নত প্রশিক্ষণ ও কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়ানোর প্রস্তাব দেন।ব্যাঙ্কগুলিকে আমানত বাড়ানোর কথাও বলেন।
দীর্ঘদিন ধরে টালমাটাল আর্থিক অবস্থার জেরে জীর্ন-প্রায় অবস্থা কাটাতে সরকারের তরফে এই উদ্যোগ বলেই দাবি করেছেন শাসকদল। এই বিষয়ে সমবায় মন্ত্রী অরূপ বাবু জানান, গত কয়েক বছরে তাঁরা অনেক ব্যাংকেই স্বনির্ভর করে তুলেছেন ।মুখ্যমন্ত্রীর গড়ে দেওয়া কমিটি সমবায় ব্যাঙ্কগুলিকে নতুন দিশা দেখাবে। যদিও বিরোধীদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই সব পরিকল্পনা সবই ‘আই ওয়াশ’ । শুধুমাত্র পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মানুষকে প্রভাবিত করতে রাজনৈতিক চাল ছাড়া আর কিছুই না।