
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আগামী ১৪ ই মে এক দফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন করার প্রস্তাবে সম্মতি দিলো রাজ্যের নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তের বিরোধীতা করেই বিরোধীরা আদালতে সওয়াল করতে চলেছেন। ওয়াকিবহাল কমিটির মতে, বিরোধীরা যেভাবে ফের আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলেছেন, তার জেরে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনি জটিলতা বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। শুধুমাত্র তাই নয় এর জেরে নির্বাচন কমিশনের ফের আদালতের ভৎর্সনার মুখোমুখি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। ভৎর্সনার কারণ হিসেবে যে প্রশ্নগুলি উঠে আসবে ওয়াকিবহাল কমিটির মতে সেগুলি হলো, প্রথমত, কমিশনই প্রথমে জানিয়েছিল যে তিন দফায় রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট করাতে চায়।
আরো খবর পেতে চোখ রাখুন প্রিয়বন্ধু মিডিয়া-তে
তিন দফা না হলেও কমপক্ষে দুই দফায় ভোট করানোর কথাও বলেছিল কমিশন। তা হলে আচমকা কী করে রাজ্যের একদফায় ভোট করানোর প্রস্তাব মেনে নিল, এই বিষয়ে প্রশ্ন উঠবে।দ্বিতীয়ত, রাজ্যের মোট নির্বাচনী কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮ হাজার ৪৬৭টি। এ দিকে সশস্ত্র ও লাঠিধারী মিলিয়ে রাজ্যের হাতে রয়েছে সাকুল্যে ৫৮ হাজার নিরাপত্তারক্ষী। ফলে প্রতিটি বুথে নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন করা প্রায় অসম্ভব। এক্ষেত্রে ফের বিষয়টি আদালতে গড়ালে নিরাপত্তার বিষয়ে ফের প্রশ্ন উঠবে। তৃতীয়ত, ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় একাধিক হিংসাত্মক ঘটনায় বহু রক্ত ঝরেছে। একাধিক প্রাণহানিও ঘটেছে। উলেখ্য এর আগেও কমিশন মনোনয়নের জন্য অতিরিক্ত একদিন ঘোষণা করেও ফের তা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। যার জেরে আদালতের দ্বারস্থ হন বিরোধীরা। এবং আদালতের কাছে চরম ভৎর্সনার শিকার হয় কমিশন। এই প্রসঙ্গে সিপিএম নেতা তথা আইনজীবি বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বললেন, ”কমিশন নিজেই তো পরস্পর বিরোধী কথা বলছে। প্রথমে ওরা বলেছিলেন তিন দফায় ভোট হবে। রাজ্যের হাতে পর্যাপ্ত বাহিনী নেই। জেলায় জেলায় হিংসাত্মক ঘটনা বাড়ছে। এই অবস্থায় কীভাবে এক দফায় ভোট সম্ভব।এক দফায় কোনও অবস্থাতেই ভোট করানো সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমাদের তো আদালতে যেতে হবেই।” এদিন তিনি সরকার এবং কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষকে পথে নেমে আন্দোলন অকে তীব্রতর করার আহ্বান জানালেন। এক দফায় ভোট ঘোষণার বিষয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বললেন, ”আমরা আদালতে যাব। আমরা সবদিক খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।” একই বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ”এই কমিশন শিরদাঁড়াহীন। ফলে ওরা রাজ্যের সিদ্ধান্ত মেনে নেবে, এটাই স্বাভাবিক। আমরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।”