
প্রিয় বন্ধু মিডিয়া রিপোর্ট – গতকাল বাঘা যতীনের এক নার্সিংহোম একাধিক কারণ দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছিল স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের বিনামূল্যে চিকিৎসা, এবার একই ঘটনা ঘটল শিলিগুড়িতে। স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে একটি সরকারি ও তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘুরেও মিলল না চিকিৎসা পরিসেবা। প্রায় বিনা চিকিৎসায় প্রাণ হারালেন শিলিগুড়ির বাসিন্দা আবদুল গফফর। মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের বাস্তব কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন তুলল বিজেপি। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানালেন, ঘটনায় দোষী প্রমাণ হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
শিলিগুড়ির মাটিগাড়ার বাসিন্দা হলেন আবদুল গফফর। ৬৫ বছর বয়স্ক আবদুল গফফর গত ৬ ই জানুয়ারি ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর দ্রুত তাঁকে চিকিৎসার জন্য উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যায় তার পরিবার। তাঁর পরিবারের কাছে ছিল বৈধ স্বাস্থ্য সাথী কার্ড। কিন্তু উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ তাঁকে ভর্তি নেয় না। এরপর তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোড এর মুখার্জি নার্সিংহোমে, সেখানে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় নেওটিয়া গেটওয়েল হেল্থকেয়ারে। সেখানেও ফিরিয়ে দেয়া হলে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় শিলিগুড়ি ডিসান হাসপাতালে। তবে সেখানেও মেলেনি পরিষেবা।
আবদুল গফফরের পরিবারবর্গ অভিযোগ করেছেন যে, তাঁদের সঙ্গে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকার পরেও সব হাসপাতাল ফিরিয়ে দিয়েছেন আব্দুল গফফরকে। শেষ পর্যন্ত প্রায় বিনা চিকিৎসায় তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত আবদুল গফফরের পুত্র জানালেন যে, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড দেখানোর পরও জানানো হয়েছে চিকিৎসা হবে না। মঙ্গলবার মারা গেছেন আব্দুল গফফর। তিনি প্রশ্ন করেছেন যে, যদি চিকিৎসা নাই হয়, তাহলে লাভ কি এতে? এ ব্যাপারে তিনি সরকারি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন। তিনি চেয়েছেন যাতে হেনস্থা না হয়, সে ব্যাপার সরকার নিশ্চিত করুক।
ফেসবুকে আমাদের নতুন ঠিকানা, লেটেস্ট আপডেট পেতে আজই লাইক ও ফলো করুন – ক্লিক করুন এখানে
আমাদের টেলিগ্রাম গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে।
আমাদের সিগন্যাল গ্রূপে জয়েন করতে – ক্লিক করুন এখানে।
স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও কেন ফিরিয়ে দেয়া হলো রোগীকে? উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সেখানে নিউরো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই, এ কারণে তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। ডিসান হাসপাতাল ও নেওটিয়া গেটওয়েল হেলথকেয়ারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এই হাসপাতালগুলো স্বাস্থ্য সাথীর আওতাভুক্ত নয়, তাই এখানে তাঁকে ভর্তি করা সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে মুখার্জি নার্সিং হোমের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সেখানে এই রোগের চিকিৎসা হয় না, এ কারণেই তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে দার্জিলিংয়ের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য জানালেন যে, এ বিষয়ে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং তৃণমূল জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার জানালেন যে, ১৪ টি নার্সিংহোমের সঙ্গে কথা হয়েছে, আরও ৪০টি নার্সিংহোমের সঙ্গে কথা হবে। কোথাও কোন অভিযোগ এলে তার জন্য গ্রিভান্স সেল খোলা হয়েছে, কোন সমস্যা থাকবে না।
তবে, স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় মুখ্যমন্ত্রীর প্রকল্পকে কাঠগড়ায় তুলেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা বিজেপি সভাপতি প্রবীণ আগরওয়াল জানালেন যে, শুধুমাত্র প্রচারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী এই কার্ড বিলি করেছেন। তাঁরা প্রথম থেকেই বলেছিলেন যে, এসব সমস্ত হলো মিথ্যে প্রতিশ্রুতি। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ইচ্ছে করেই আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প রাজ্যে প্রচার করতে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার।