
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জী নিয়ে ইতিমধ্যে দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গেও এর বিরোধিতায় কলকাতায় মহা মিছিল হয়েছে। যেখানে দলীয় সমর্থকদের সঙ্গে পা মিলিয়ে রীতিমত তুলোধোনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মোদি সরকারের। তবে এবার পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের এনআরসি নিয়ে বোঝাতে বিজেপির পক্ষ থেকেও বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিজেপির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় এনআরসি বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সাপোর্ট করে বিভিন্ন সভা এবং মিছিল হওয়া শুরু হয়েছে। এই মিছিলের নাম দেওয়া হয়েছে অভিনন্দন যাত্রা। এবার সেই যাত্রাকে ঘিরেই দক্ষিণ 24 পরগনা সোনারপুর শহরে ধুন্ধুমার হয়ে গেল।
এদিন দক্ষিণ 24 পরগনা সোনারপুর থেকে হরিনাভি পর্যন্ত বিজেপি নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন এর সমর্থনে একটি অভিনন্দন যাত্রার আয়োজন করে। এই অভিনন্দন যাত্রা শুরু হয় সোনারপুর থানার সামনে থেকে এবং শেষ হওয়ার কথা হয় হরিনাভি মোড়ে। তবে মিছিল কিছু দূর এগোতে না এগোতেই শুরু হয়ে যায় তুমুল উত্তেজনা। বিজেপি দাবি করে, তৃণমূলের লোকজন তাঁদেরকে উত্যক্ত করতে শুরু করে। যার ফলস্বরূপ তাঁরাও একইভাবে প্রতিবাদ করে এবং শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি।
এদিন বিজেপির এই অভিনন্দন যাত্রায় অংশগ্রহণ করেছিলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শর্বরী চট্টোপাধ্যায়ের মতন রাজ্যের উল্লেখযোগ্য বিজেপি নেতারা। অন্যদিকে, সূত্রের খবর, এই অভিনন্দন যাত্রা সোনারপুর থানার সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্রমশ হরিনাভি অভিমুখে এগোতেই সামনের বৈকন্ঠপুর মোড়ের কাছে বিজেপি কর্মীদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল কর্মীরা কটুক্তি করতে শুরু করে। যার ফলস্বরূপ সাথে সাথেই দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বচসা শুরু হয়। পরবর্তীতে এই বচসা গড়ায় হাতাহাতিতে। পুলিশ সামনে থাকলেও তাঁদের সামনেই নির্বিবাদে চলতে থাকে একে অপরকে কটুক্তি করা।
দেশে যে কোনো দিন ব্যান হয়ে যেতে পারে হোয়াটস্যাপ। তাই এখন থেকে আমরা শুধুমাত্র টেলিগ্রাম ও সিগন্যাল অ্যাপে। প্রিয় বন্ধু মিডিয়ার নিউজ নিয়মিতভাবে পেতে যোগ দিন –
টেলিগ্রাম গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
সিগন্যাল গ্রূপ – টাচ করুন এখানে।
জানা গেছে, এ দিনের অভিনন্দন যাত্রাকে কেন্দ্র করে এলাকায় বিশাল পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। তৃণমূল ও বিজেপির এই হাতাহাতিকে শেষ পর্যন্ত পুলিশবাহিনী নিয়ন্ত্রণে আনে বলে খবর। অন্যদিকে, এদিন জনসভা থেকে বিজেপি নেতা মুকুল রায় দাবি করেন, সর্বদাই তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিজেপিকে যেকোনোভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এদিনও অভিনন্দন যাত্রার রাস্তায় সেই বাধাই দেওয়া হয়েছিল। তবে বিজেপির পক্ষে যেভাবে বিপুল মানুষের সমর্থন রয়েছে, তা দেখে তৃণমূল ভয় পেয়ে যায় এবং আক্রমণ করে।
অন্যদিকে, দিল্লী বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে আজ। এই ফলাফলে দেখা গেছে, বিজেপি কোনরকমে হারতে হারতে নিজেদের মান রক্ষা করেছে গুটিকতক আসনে জিতে। সে ব্যাপারে বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘মানুষ গণতন্ত্রের রায় দিয়েছে। এটা গণতন্ত্রের রায়। ফলে যা সমর্থন হবে তা সকলকে মাথা পেতে মেনে নিতে হবে। ইভিএমে যে কোনও গন্ডগোল থাকে না, কোনও কারচুপি হয় না দিল্লির ভোটের ফলাফল তা আরেকবার প্রমাণ করল।’
তবে পশ্চিমবঙ্গের সামনে আসতে চলেছে পুরসভা নির্বাচন এবং আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন। সেদিকে লক্ষ্য রেখে এবার পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি রাজনৈতিক দল রণকৌশল সাজাতে ব্যস্ত। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে আম আদমি পার্টির জয় নিঃসন্দেহে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মধ্যে নতুন করে অনুপ্রেরণা যোগাবে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, এনআরসি এবং সিএএ এর ফলে ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কিছুটা কোণঠাসা অবস্থায় রয়েছে। তবে আগামী দিনের নির্বাচনে কোন দল ঘুরে দাঁড়াতে সমর্থ হবে, তা অবশ্য সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আপাতত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখবে রাজ্যের ওয়াকিবহাল মহল।