
কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র কোনদিনই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল না। দীর্ঘদিন ধরেই তা কংগ্রেসের দখলেই ছিল। তবে এবারে এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তা দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে যেভাবে এখানে বিজেপির ভোটব্যাংক বৃদ্ধি পেয়েছে, তাতে তৃণমূল আদৌ জায়গা পাবে কিনা, তা নিয়ে নানা মহলে তৈরি হয়েছিল জল্পনা।
কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে এসে বারেবারেই সাধারণ মানুষকে উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে একবার তৃণমূল প্রার্থীকে সমর্থন করার আবেদন জানান জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। সেইমত সাধারন মানুষ অবশেষে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে সমর্থন করেন তৃণমূলের তপন দেব সিংহকে। ভোটবাক্স খোলার পর দেখা যায় যে, তপনবাবুই কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচিত হন।
আর ভোটের আগে প্রচারে নানা উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুভেন্দু অধিকারী এবার জয়লাভের পর সেই উত্তর দিনাজপুরে এসে সাধারণ মানুষকে ধন্যবাদ জানালেন। সূত্রের খবর, রবিবার কালিয়াগঞ্জের মহেন্দ্রগঞ্জ নাটমন্দির প্রাঙ্গণে তৃণমূলের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। আর সেখানেই উপস্থিত হন জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আর এখানে উপস্থিত হয়েই বক্তব্য রাখতে উঠে সাধারণ মানুষের উদ্দেশ্যে করজোড়ে নমস্কার জানিয়ে শুভেন্দুবাবু নিজের বক্তব্য রাখেন।
তিনি বলেন, “আপনারা আমাদের আশীর্বাদ করেছেন। আমরা উন্নয়ন করব। কিন্তু আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের মত সব একেবারে হবে না। এক এক করে করব। আমাদের সবটাই দেখতে হবে। আপনারা প্রস্তাব দেবেন। আমি দেখে নেব।” তবে কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল প্রার্থী জয়লাভ করলেও যে সমস্ত মানুষ বিরোধীদের সমর্থন জানিয়েছেন, তাদেরকেও এদিনের সভা থেকে আপন করে নেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী।
ফেসবুকের কিছু টেকনিক্যাল প্রবলেমের জন্য সব আপডেট আপনাদের কাছে সবসময় পৌঁচ্ছাছে না। তাই আমাদের সমস্ত খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে যোগদিন আমাদের হোয়াটস্যাপ বা টেলিগ্রাম গ্রূপে। ১. আমাদের Telegram গ্রূপ – ক্লিক করুন প্রিয় বন্ধু মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের নোটিফিকেশন আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্রাউসারে সাথে সাথে পেতে, উপরের পপ-আপে অথবা নীচের বেল আইকনে ক্লিক করে ‘Allow‘ করুন।
২. আমাদের WhatsApp গ্রূপ – ক্লিক করুন
৩. আমাদের Facebook গ্রূপ – ক্লিক করুন
৪. আমাদের Twitter গ্রূপ – ক্লিক করুন
৫. আমাদের YouTube চ্যানেল – ক্লিক করুন
পাশাপাশি দলীয় নেতাকর্মীদের বার্তা দিয়ে তিনি বুঝিয়ে দেন, আগামী নির্বাচনের ভালো ফল করবার জন্য বিরোধীদের ভোটবাক্সে সমর্থন দেওয়া মানুষদেরও কাছে টানতে হবে। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী বলেন, “এই উপনির্বাচনটা আমাদের কাছে কোয়াটার ফাইনাল ছিল। ছিল উপনির্বাচনে যারা ভোট দেননি, তাদের শত্রু না ভেবে বন্ধু বলে কাছে টানতে হবে। কালিয়াগঞ্জ উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীকে আপনারা আশীর্বাদ করেছেন।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের নেত্রী আপনাদের উন্নয়নের উপহার তুলে দেবেন। আমি গ্যারান্টার হিসেবে থাকব। এরপর বছরখানেকের মধ্যেই জেলায় তিনটে পৌরসভার নির্বাচন হতে পারে। ওই নির্বাচন হবে সেমিফাইনাল। তারপর 2021 সালে বিধানসভা নির্বাচন হবে ফাইনাল। তাই আমাদের এই জয়ের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।” এদিকে এদিন জয়ের পর বিজয় মিছিল না করার কথা বলেন শুভেন্দুবাবু।
দলীয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “আগে আমরা দেখেছি নির্বাচনের পর বিজয় মিছিলের নামে অনেকের বাড়ি ভাঙচুর, হিংসার ঘটনা ঘটত। আমাদের নেত্রীর নির্দেশ বিজয় মিছিলের জন্য মানুষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করুন। তাদের সমস্যার কথা শুনুন। সাধ্যমত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন। এবারের উপনির্বাচনে যারা আমাদের ভোট দেননি, তাদেরকে আপন করে নিন। সরকারি প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পেতে সহযোগিতা করুন।”
এদিকে উন্নয়নের বার্তা দিয়ে এদিন বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন তৃণমূলের শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, “আপনারা দুটি পার্টিকে তুলে দিয়েছেন। কংগ্রেস এবং সিপিএম বিজেপি বি এবং সি টিম হিসেবে কাজ করত। ওদের ভোট কাটাকাটির জন্য আমাদের লোকসভা ভোটের ফল খারাপ হয়েছিল।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোট বৃদ্ধি করার জন্য বিরোধী বাক্সে সমর্থন দেওয়া মানুষকে আপন করে নেওয়ার কথা বলে শুভেন্দু অধিকারী মাস্টারস্ট্রোক দিলেন। কেননা তিনি এই কথা বলে বিরোধী বাক্স সমর্থন দেওয়া মানুষদের ভাবাবেগ যেমন নিজেদের দিকে আনার চেষ্টা করলেন, ঠিক তেমনই তাদের উন্নয়নের স্বাদ পাইয়ে দেওয়ার জন্য কৌশলী মন্তব্য করে আগামী বিধানসভা ভোটে তাদের সমর্থন নিজেদের বাগে আনার কৌশলী মন্ত্র দিলেন।