
অভ্র – আচ্ছা – শোনো শোনো , তোমার বিয়ে কবে ঠিক হয়েছে ?
দীপশিখা – এখনো ঠিক হয়নি,
অভ্র – – তবে যে বললে?
দীপশিখা – বাবা মা দেখে গেছে, ছেলে এখনো আসেনি, পিকচার দেখে বলেছে পছন্দ, সো বিয়ে ঠিকই হয়ে আছে, সো একবার ছেলে দেখলেই দিন ঠিক হবে।
অভ্র – শোনো , ওই ছেলের নির্ঘাত কিছু প্রব্লেম আছে, বিয়ে করো না, শ্রাবণীদি ঠিক বলছে, না দেখেই কেউ হ্যাঁ বলবে না। তুমি বিয়ে করো না পস্তাবে
দীপশিখা – হয়ে গেছে রাখছি
অভ্র – বাব্বা , এখন থেকেই হবু বর এর নামে নিন্দা শুনবে না ?
দীপশিখা – যত বাজে কথা।
অভ্র – নাম কি ছেলেটার ? কি করে ? দেখতে কেমন?
দীপশিখা – নাম জানি না,ডাক্তার ,দেখতে কেমন জানি না
অভ্র – ডাক্তার , নাম জেনে বলো আমি ঠিক বের করে নেবো
দীপশিখা – রাখছি
অভ্র – শোনো কাল কথা বলবো না ঠিক আছে ,তুমি এই দুদিন ভাব, দেন বুধবার রাত্রে কথা বলছি .
দীপশিখা – বাই, তবে নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। রাখছি
বাড়ি এসেছে দীপশিখা। শুনেছে ছেলে বলেছে দেখতে আসবে তাই বাড়ি আসতে বলা হয়েছে। মন ভারী হয়ে গেছে ওর, সারাটা দিন কেঁদেছে। বার বার অভ্রর চ্যাট পড়েছে। কিছুতে বের হচ্ছে না অভ্র ওর মাথা থেকে ? কি করবে ও ? চলে জেবে অভ্রর সাথে? যা হবে হোক, দিদিও তো গেছে? তারপরেই মনে পড়েছে ওর মায়ের মুখটা, বাবার মুখটা। না পারবে না ও।
মঙ্গলবার বিকালে ছোট বৌদি সাজিয়ে দিয়েছে, ছেলে আসছে দেখতে সাথে তার কেউ আত্মীয়। বড় বৌদি এসে জানালো ওরা এসে গেছে, ছেলেকে দেখতে বেশ , ভালো মানাবে। দীপশিখা জানে কাউকে মানাবে না শুধু অভ্র ছাড়া। আর হয়তো কদিন পরেই বিয়ে। অভ্রকে ছেড়ে ওই লোকটার সাথে কথা বলতে হবে, হয়তো সারাজীবন ওই লোকটার মধ্যে অভ্রকে খুঁজে বেড়াতে হবে দীপশিখাকে। আচ্ছা দীপশিখাকে অভ্র মনে রাখবে? বিয়ে করে ভুলে যাবে নিশ্চই। যাক, মনে রেখে লাভ কি? কিন্তু দীপশিখা অভ্রকে ভুলবে না কোনোদিন।
ডাক পড়লো দীপশিখার , গায়ে শাড়িটা জড়িয়ে ঘরে ঢুকলো, মাথা নামিয়েই সোফায় গিয়ে বসলো। জ্যেঠু কথা বলছে ,বাবা বসে আছে, বড়দা, ছোটদা আর ছোট বৌদি আছে। ছেলের সাথে যারা এসেছেন তারাই কথা বলছেন। দীপশিখাকে কয়েকটা কথা জিজ্ঞাসা করেছে মাথা নিচু করেই উত্তর দিয়েছে দীপশিখা। কথাবার্তা চলছে, জ্যেঠু ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন – আচ্ছা তোমার নামটা যেন কি? ভুলে গেলাম,
ছেলে – অভ্রদীপ
না নাম আর গলাটা চিনতে এতটুকুও অসুবিধা হয়নি দীপশিখার , চমকে তাকালো। অভ্র ?
যেন কিছু জানে না একটা ভালোমানুষের মুখ করে আড় চোখে দীপশিখার দিকে তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিলো।
দীপশিখায় চোখ নামিয়ে নিয়েছে। হিসাব মিলছে না, অভ্র ?
তাহলে সব জেনে বুঝে এতদিন দীপশিখার সাথে ফ্লার্ট করেছে?
সেদিন ও বলেনি যে ওই যে দেখতে আসছে?
ফটো দেখে তো আগেই পছন্দ করেছিল। তার মানে সব তাই প্ল্যান করে করেছে, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো, প্রপোজ, কথা বলা সব, দীপশিখাকে পরীক্ষা করছিলো , কেমন মেয়ে সে ?
অভ্র জানে দীপশিখা এবার মেরেই ফেলবে, দীপশিখার মুখটা দেখেই বুঝেছে যে কোনো মুহূর্তেই বৃষ্টি নামবে।
এর মধ্যেই অভ্রর এক দাদা বললেন, ওদের দুজনকে একটু একা কথা বলতে দিলে ভালো হয়, কেননা ওদের তো কিছু কথা থাকতে পারে। অভ্র অনেকক্ষন থেকে এই সুযোগটা খুঁজছিলো।
ছোট বৌদি দুজনকে ওদের ঘরে নিয়ে গেলো। বসতে বলে বাইরে বেরিয়ে গেলো।
অভ্র কিছু বলতে যাচ্ছিলো লক্ষ্য করলো দরজায় দাঁড়িয়ে আছে কেউ, বললো – কোথায় থাকো কলকাতায়?
দীপশিখা ভুরু কুঁচকে তাকাতেই ইশারা করে অভ্র দরজায় দেখালো।
দীপশিখা বললো। এইভাবেই কয়েকটা কথা চললো।
অভ্র এর মাঝেই দীপশিখার কাছে ইশারায় ক্ষমা চেয়েছে, কিন্তু দীপশিখা মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে।
কিছুক্ষন পর বৌদি গলা ঝেড়ে ঘরে ঢুকলো। দীপশিখা ঘরেই রইলো অভ্র চলে গেলো , যাবার আগে চোখের ইশারায় ফের ক্ষমা চেয়েছে। না খুব খারাপ লেগেছে দীপশিখার। আর কথাই বলবে না ও।
অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা-পর্ব ৮
অ্যানসার প্লিজ – (লাভ স্টোরি) – কলমে অপরাজিতা- অন্তিম পর্ব