
কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারের হঠাৎ পদোন্নতি শোরগোল ফেলেছে রাজনৈতিক মহলে। মহাকুমা শাসকের পাশাপাশি বরহমপুর পুরসভার প্রশাসক পদের দায়িত্ব তাকে দেওয়ায় নতুন বিতর্কের সৃষ্টি হল। প্রশাসক নিয়োগের আড়াই মাসের মধ্যে বহরমপুর পুরসভায় দু’জনের বোর্ড গঠন করা হল কেন তা নিয়েই প্রশ্ন দানা পাকিয়েছে বিরোধীমহলে।
ইতিমধ্যেই পুরভবনে দোতলায় কনফারেন্স হল নতুন প্রশাসক অপূর্ব বাবুর জন্যে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং গতকাল সেই ঘর পরিষ্কারও করা হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে৷ প্রসঙ্গত,চলতি সপ্তাহের সোমবার,পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর থেকে এই নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়েছে,১৯৯৩ সালের পুর আইন অনুসারে বহরমপুর পুরসভা পরিচালনার জন্য বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স গঠন করা হয়েছে। কান্দির বিধায়ক অপূর্ব ও বহরমপুরের এসডিও এই দু’জন বোর্ডের সদস্য। বোর্ডে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলাবেন এসডিও। রাজ্যপালের নির্দেশ মেনেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
বিভিন্নমহলের বক্তব্য,দীর্ঘদিন ধরেই পুরসভা পরিচালনা নিয়ে প্রশাসক, পুরকর্মী ও প্রাক্তন কাউন্সিলারদের মধ্যে বনিবনা হচ্ছিল না। এর জেরে শহরের নাগরিক পরিষেবা ও উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছিল। এর জন্যেই পুরসভায় তড়িঘড়ি করে বোর্ড অব অ্যাডমিনিস্ট্রেটর্স গঠন করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের পৌর কর্মচারী ইউনিয়নের জেলা সভাপতি নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুরসভায় দুটি বোর্ড গঠন করে ভালোই করেছে রাজ্য সরকার এর ফলে শহরের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে আরো গতি আসবে বলেই আশা রয়েছে তাঁর। আর এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্কের কোনো কারণ নেই বলেও সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি। একই সুরে কথা বললেন প্রশাসনের অন্য এক আধিকারিক। তাঁর বক্তব্য,”এখানে বিতর্কের কিছু নেই। রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনেই পুরসভা পরিচালনা করা হবে।”
ফেসবুকের কিছু টেকনিক্যাল প্রবলেমের জন্য সব আপডেট আপনাদের কাছে সবসময় পৌঁচ্ছাছে না। তাই আমাদের সমস্ত খবরের নিয়মিত আপডেট পেতে যোগদিন আমাদের হোয়াটস্যাপ বা টেলিগ্রাম গ্রূপে।
১. আমাদের Telegram গ্রূপ – ক্লিক করুন
২. আমাদের WhatsApp গ্রূপ – ক্লিক করুন
৩. আমাদের Facebook গ্রূপ – ক্লিক করুন
৪. আমাদের Twitter গ্রূপ – ক্লিক করুন
৫. আমাদের YouTube চ্যানেল – ক্লিক করুন
প্রিয় বন্ধু মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরের নোটিফিকেশন আপনার মোবাইল বা কম্পিউটারের ব্রাউসারে সাথে সাথে পেতে, উপরের পপ-আপে অথবা নীচের বেল আইকনে ক্লিক করে ‘Allow‘ করুন।
এদিকে কান্দির বিধায়ককে লোকসভা ভোটের মুখে নতুন পদের দায়িত্বে আনায় জল্পনা শুরু হয়েছে বিরোধীমহলে। স্থানীয় সূত্রের খবর,মুর্শিদাবাদ বরাবরই কংগ্রেসের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। আর একসময় এই জেলা রাজনীতির বেতাজ বাদশা ছিলেন প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। আর অধীর বাবুর ঘনিষ্ঠ হিসাবেই বিশেষ পরিচিতি ছিল অপূর্ব বাবুর। ২০০০ সাল থেকে কান্দি পুরসভার দায়িত্বে রয়েছে অপূর্ব বাবু। আর ২০০৬ সাল থেকে কান্দির বিধায়ক তিনি। বর্তমানে ওই এলাকার চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন তিনি।
এবারের লোকসভা ভোটে বহরমপুর কেন্দ্রে অধীর বাবুর বিরুদ্ধে অপূর্ব বাবুকে তৃণমূল দাঁড় করাতে পারে বলেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। এবার সেই জল্পনাই অক্সিজেন পেল অপূর্ব বাবুর পদোন্নতির জেরে। তবে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে,দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকলেও অপূর্ব বাবুর জনপ্রিয়তা কেবল কান্দির সংক্ষিপ্ত পরিসরেই সীমাবদ্ধ। সেখানে একসময়ের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দায়িত্বে থাকার সুবাদে অধীর চৌধুরীর জনপ্রিয়তা গোটা রাজ্য জুড়েই।
তাই অধীর বাবুকে লোকসভা ভোটে টক্কর দেওয়ার জন্যেই অপূর্ব বাবুর ক্ষমতা বাড়ানো হল বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে লোকসভা ভোটের প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো ইঙ্গিত দেননি অপূর্ব বাবু। তিনি জানালেন,”পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী আমাকে বহরমপুরের মানুষের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। নিষ্ঠার সঙ্গে সেই কাজ করব। এরসঙ্গে লোকসভা ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। ভোটে প্রার্থীর বিষয়ে কিছু জানা নেই।”